ইটভাটায় বন্ধ হচ্ছে না শিশুশ্রম

মোহাম্মদ আলী : যে বয়সে বেড়ে উঠার কথা দুধে ভাতে, বই হাতে যাওয়া কথা স্কুলে, খেলাধুলায় মত্ত কথা বন্ধুদের সাথে, সেই বয়সে ইটভাটার মতো কঠিন ও ভারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক হয়ে উঠছে শিশুরা। আর শিশুদের এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে উৎসাহ যুগাচ্ছে স্থানীয় কতিপয় অসাধু ভাটা মালিকরা।
অনুসন্ধানে জামালপুর জেলা ও উপজেলা বেশ কয়েকটি ইটভাটায় শিশুশ্রম লক্ষ্য করা গেছে।
তাদের মধ্যে জেলার মেলান্দহ উপজেলার বুরুঙ্গা গ্রামে অবস্থিত বাদশাহ ব্রিকস। এ ইটভাটায় কাজ করে, সেলিম (১২), মামুন (১০), ফরহাদ (৮) ও সিয়াম ( ৬) সহ আরও কয়েকজন শিশু। ভাটার আশেপাশেই তাদের বাড়ি। সকাল ৭টা বাজতেই তারা চলে আসে ভাটায়। কাজ করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। সারাদিনের হার ভাঙ্গা পরিশ্রমের বিনিময়ে তারা কেউ পায় ২শ, কেউ ১শ ৫০, কেউ পায় মাত্র ১শ টাকা।
এলাকাবাসী জানান, অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের তুলনায় ইটভাটার কাজে পরিশ্রম বেশি। অথচ এ কাজে মজুরি কম। আরও কম পয়সায় কাজ করিয়ে নিতে ইটভাটার মালিকরা এখানে শিশুদের ব্যবহার করে। যে কাজ শিশুদের ১শ টাকা দিয়ে করানো হয়, সে কাজ বড়দের দিয়ে করালে ভাটা মালিককে গুনতে হবে ৫শ টাকা। তাই, ইটভাটায় শিশুশ্রম আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও শুধু টাকা বাঁচাতে তারা শিশুদের কাজে লাগায়।
শিশু বিষয়ক চিকিৎসক ডাঃ হারুন অর রশিদ বলেন, ইটভাটার মতো কঠিণ ভারি ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুরা জড়িয়ে পড়লে তাদের মেধা মনন ও স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্ত হয়। হতে পারে শ্বাস কষ্টের মতো জটিল রোগ। এছাড়া কোনো দুর্ঘটনায় তাদের বড় ধরনের আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার বা পঙ্গুও হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এব্যাপারে বাদশাহ ব্রিকস এর মালিক বাদশাহ বেপারী বলেন, ইটভাটায় শিশুশ্রম এ আর নতুন কী? সারা দেশেই তো হয়। শিশুদের মা বাবারাই তাদের সন্তানদের ইটভাটায় কাজে দেয়। এখানে আমরা কী করব?