Friday, September 29, 2023
Homeজামালপুরইসলামপুরে পশ্চিম গঙ্গাপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভবন নির্মাণে অনিয়ম

ইসলামপুরে পশ্চিম গঙ্গাপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভবন নির্মাণে অনিয়ম

ওসমান হারুনী : জামালপুরের ইসলামপুরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন এবং নির্মাণ কাজ দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে মাদ্রাসা ভবনের দেওয়াল তৈরি করা করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অনিয়মের প্রতিবাদ করলেও কোনো ধরণের তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারের লোকজন। তবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দাবি করা হয়, ইট ভাটার লোকজন কিছু নিম্নমানের ইট ঢুকে দিয়েছিলো। কিন্তু নিম্নমানের ওইসব ইট ভবন নির্মাণে ব্যবহার করা হয়নি।’ স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বুধবার ২৯ মার্চ সকাল ১০টার দিকে ঠিকাদারের নির্মাণ শ্রমিকরা নিম্নমানের ইট দিয়ে ভবনের নির্মাণ কাজ করতে থাকে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারী আপত্তি জানালেও তা আমলে নেয়নি ঠিকাদারের লোকজন। জানা যায়, উপজেলার ইসলামপুর সদর ইউনিয়নের পশ্চিম গঙ্গাপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার চারতলা ভিত বিশিষ্ট দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। জামালপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে গত ১
জানুয়ারি থেকে জয় ট্রেডাস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটির নির্মাণ কাজ করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জেলা কৃষক লীগের সভাপতি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ। ভবনটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ টাকা। সরেজমিনে দেখা যায়, মাদ্রাসা মাঠে নিম্নমানের ইটের স্তুপ। নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলার দেওয়ালে লাগানো হয়েছে নিম্নমানের ইট। স্থানীয় বাসিন্দা প্রত্যাক্ষদর্শী জসি শেখ, মজনু আকন্দ, নুরল ইসলাম, সুজন মিয়াসহ অনেকেই বলেন, ‘ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করতে দেখে আমরা সত্যিই লজ্জিত। নিম্নমানের ইট ব্যবহার করতে না করলেও আমাদের কথা ঠিকাদারের লোকজন মানে না।’ মাদ্রাসার দপ্তরি মোহাম্মদ শুভ মিয়া বলেন, ‘কমপক্ষে ৩ হাজার পঁচা ইট দিয়ে মাদ্রাসার দেওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। যে কোনো সময় ভবনে ধস দেখা দিতে পারে।’ একাধিক নির্মাণ শ্রমিক তাদের নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ‘রমজান মাসে রোজা রেখে আমরা মিথ্যা কথা বলতে পারবো না। ঠিকাদারের ম্যানেজার আব্দুল মান্নানের কথা মতো এ পর্যন্ত আনুমানিক ৩ হাজার নিম্নমানের ইট ভবনে লাগিয়েছি। ভবনটি টিকবে না।’ মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, ‘বুধবার মাদ্রাসার ভবন নির্মাণে মানহীন ইট ব্যবহার করেছে ঠিকাদারের লোকজন। এর আগে গত ২৬ মার্চেও মানহীন ইট দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হয়। আমরা বারবার আপত্তি জানালেও ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের ইট ব্যবহার করেই যাচ্ছে।’ মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘নিম্নমানের ইট দিয়ে ভবন নির্মাণ না করতে একাধিকবার বললেও ঠিকাদারের লোকজন তা আমলে নেয়নি।’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয় ট্রেডাসের স্বত্বাধিকারী জেলা কৃষক লীগের সভাপতি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘ইটভাটার লোকজন ভুলক্রমে গাড়িতে নিম্নমানের কিছু ইট ঢুকে দিয়েছিলো। তবে আমরা ওইসব ইট ভবন নির্মাণে ব্যবহার করিনি। নির্মাণ শ্রমিকদের বলেছি, ওই ইটগুলো ইট ভাটায় ফেরত পাঠাতে।’ জামালপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভবন নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে কি-না, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সরেজমিনে খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments