কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের ‘সী আলিফ’ হোটেলের কক্ষ থেকে কন্যা শিশুসহ সুমা দে (৩৫) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে এবং আট মাস বয়সী মেয়েকে বালতির পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন স্বামী জেবিন দে (৪০)।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঘটনার পর অভিযুক্তকে আটক করতে নিকটবর্তী থানায় খবর পাঠায় পুলিশ। ওই খবরের প্রেক্ষিতে নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী ও আট মাস বয়সী মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করেন জেবিন দেব।

জিজ্ঞাসাবাদে জেবিন দেব জানান, তিনি একজন প্রবাসী। পারিবারিকভাবে অসন্তোষ ছিল। তাদের সাংসারিক জীবনে কলহ লেগে ছিল। স্ত্রী পরকীয়া করতেন বলে সন্দেহ ছিল তার। তাই ছোট মেয়েকে নিয়ে সংসারে অশান্তি ও সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বিদেশ থেকে ফিরে আসেন। দেশে আসার পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি একবার কক্সবাজার এসে ঘুরে যান। ওই সময় তার স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে মোতাবেক ১৪ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যান। তারা হোটেল সী আলিফে ওঠেন। পরিকল্পনা মতো স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা করেন।
গতকাল শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কলাতলীর সী আলিফ নামের আবাসিক হোটেলের ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
হোটেল সী আলিফ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দুই ছেলে, এক মেয়েসহ তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেল কক্ষ ভাড়া নেন। এরপর তারা কয়েক দিন কক্সবাজার শহরে ঘুরে বেড়ান। শুক্রবার সকালেও তাদের সবাইকে হাসিমুখে দেখেছেন হোটেলের লোকজন। পরে দুপুর ২টার দিকে হঠাৎ তাদের কক্ষের দরজা খোলা ও ভেতরে মা-মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে অন্য দুই ছেলেকে নিয়ে স্বামী আগেই পালিয়ে যান। তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশে খবর দেয় হোটেল কর্তৃপক্ষ।