নিজস্ব সংবাদদাতা ;যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি আবার জেগে উঠতে শুরু করেছে। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বন্যাদুর্গতরা। তবে বানভাসিদের দুর্ভোগ ও দুর্দশা এখনও কাটেনি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জেলার বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ৪০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার দুই লাখ ৫০ হাজার ২২৮ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি, মৎস্যখামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে ডুবে তিন শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে পানি ১১ সেন্টিমিটার কমে গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। খুব দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুর্গত এলাকার সব পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আপাতত পানি বাড়ার শঙ্কা নেই। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে যেসব এলাকার পানি নেমে গেছে, সেসব এলাকার মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এখনও বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। স্থানীয় অনেক রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয়দের। জেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। যারা পানিবন্দি অবস্থায় বাড়িঘরে আছেন, তাদের অনেকে কষ্টে জীবনযাপন করছেন। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে জানিয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দুর্গত এলাকায় প্রতিদিন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যাদুর্গত মানুষের না খেয়ে থাকার সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটি এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দুর্গতদের মাঝে ৫৪০ মেট্রিক টন চাল, সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা ও সাড়ে চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘বন্যায় তলিয়ে গেছে ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এর মধ্যে রয়েছে আউশ, আমন, বীজতলা, কলা, পাট, মরিচ, ভুট্টা, তিল ও নানা ধরনের শাকসবজি। গত কয়েকদিন এসব ধান ও শাকসবজি পানির নিচে থাকায় বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।’ স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত ২ জুলাই থেকে জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষত কাটিয়ে না উঠতেই ১০ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়ে জেলাবাসী।
Related Posts
শাখাওয়াত হোসাইন মানবসেবা ফাউন্ডেশনের চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
- AJ Desk
- September 30, 2024
নিজস্ব সংবাদদাতা : জামালপুরের বকশিগঞ্জে শাখাওয়াত হোসাইন মানবসেবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও […]
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে বেধে রাখার অভিযোগ
- AJ Desk
- June 22, 2024
খাদেমুল ইসলাম : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে এক পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে খুটির সাথে […]
ইসলামপুরে বিএনপি’র মত বিনিময় সভা
- AJ Desk
- September 1, 2024
ইসলামপুর সংবাদদাতা : সাংগঠনিক অবকাঠামো জোরদার করার লক্ষে জামালপুরের ইসলামপুরে বিএনপি’র মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত […]