জামালপুরের মাদারগঞ্জে গৃহবধূ তানজিনা আক্তার হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী এবং স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে মাদারগঞ্জ উপজেলার রায়েরছড়া বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পাশের মাদারগঞ্জের রায়েরছড়া বাজারে স্বামীর বাড়িতে নিহত হন তানজিনা আক্তার ।
এলাকাবাসী জানায়, মাদারগঞ্জের সিঁধুলী ইউনিয়নের সদরাবাড়ী গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের চর লোটাবার গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে তানজিনা আক্তারের (১৮) বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর যৌতুকের দাবিতে তানজিনা আক্তারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে স্বামী হেলাল ও তার পরিবার। পরে মেয়ের বাবা হেলাল উদ্দিনকে নগদ এক লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন। এর কিছুদিন পর হেলাল বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তার শ্বশুরের কাছে আরও টাকা দাবি করেন। এ দফায় তারা মিয়া তাকে আবারও সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেন। এক বছর পূর্বে হেলাল উদ্দিন সৌদিতে চলে যান।
বিদেশ যাওয়ার কিছুদিন পর ফের ২০ হাজার টাকা দাবি করে হেলাল উদ্দিন। তানজিনা আক্তারের বাবা তারা মিয়া টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। এরপর তানজিনা আক্তারের ওপর নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ১ মার্চ বিকেলে তানজিনাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হেলালের পরিবার।
এ ঘটনায় তানজিনা আক্তারের মা রিক্তা বেগম বাদী হয়ে গত ২ মার্চ মাদারগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে আসামিরা গা-ঢাকা দিয়েছে।
পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মতিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম মৃদা, বাদল মিয়া, লাইলী বেগম, কবুরী বেগম ও ফিরোজা বেগম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে তানজিনা আক্তারের বাবা তারা মিয়া বলেন, কয়েক দফায় হেলাল ও তার পরিবারকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। তারপরও তার মেয়ের ওপর নির্যাতন কমেনি। পাষণ্ডরা আমার মেয়েকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরেছে।
এ বিষয়ে শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) মাসুদ পারভেজ বলেন, এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।