নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বেকারি পণ্যেও। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকার বনরুটি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। রুটির সাইজও আগের তুলনায় ছোট করা হয়েছে।
ভোক্তাদের অভিযোগ, পাঁচ টাকা মূল্যের বনরুটির সাইজ এখন অনেক ছোট করা হয়েছে। তাও সব জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) জামালপুর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বেকারি পণ্যের দোকানে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দেড়শ গ্রাম ওজনের বনরুটির দাম আগে ছিল ২০ টাকা। এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। আড়াইশ গ্রামের দাম ছিল ৩০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। সাড়ে চারশ গ্রাম ওজনের ৬০ টাকার রুটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।
আগে হাফ পাউন্ড ওজনের কেকের দাম ছিল ২৫ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। এক পাউন্ড নরমাল কেকের দাম ছিল ৬০ টাকা। সেটির দাম বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা। আর যেসব বনরুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে সেগুলোর সাইজ ছোট হয়ে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আগে ৫০ কেজির আটার বস্তার দাম ছিল ১৪০০-১৫০০ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০০-২২০০ টাকা। ময়দার বস্তা আগে ৩২০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ৪২৫০ টাকা।
এছাড়া বেকারি পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন—তেল, ঘি, ডালডা ও চিনিসহ সব পণ্যের দাম বেড়েছে।
এক কার্টন (১৫-১৬ কেজি) ডালডার দাম আগে ছিল ২৭০০ টাকা, এখন বেড়ে হয়েছে ৩৩০০ টাকা। ৫০ কেজির চিনি বস্তা আগে ছিল ৩৬০০ টাকা, এখন দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ টাকায়। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ২০০ টাকা।
সজীব সাহা নামের একজন ভোক্তা বলেন, ‘যে টোস্ট আগে ১১৫ টাকা কেজি কিনতাম, এখন সেটি ১৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ৩০ টাকার রুটি এখন ৫৫ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে না। সব বেকারি পণ্যেরই দাম বেড়েছে।’
আনন্দ বেকারির স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল বলেন, ‘বেকারির জন্য ময়দা, চিনি এবং তেল খুব অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু এসব পণ্যের বাজারে এখন আগুন। এখন বেকারি চালানোই আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে জামালপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকার থেকে যেসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া থাকে সেগুলোর দাম আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে স্থানীয়ভাবে যেসব পণ্য উৎপাদন হয় সেগুলো দাম নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। বেকারি পণ্য তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়ার কারণে মালিক পক্ষ দাম বাড়ানোর ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। এ সময় তাদের বলেছিলাম অযৌক্তিকভাবে যেন কোনো পণ্যের দাম বাড়ানো না হয়। নির্দিষ্ট কোনো বেকারির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’