জামালপুরে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বানভাসি মানুষ। জেগে উঠেছে রাস্তাঘাট। বেশির ভাগ ঘরবাড়ির আঙিনায় এখন আর পানি নেই। পুরোপুরি পানি কমায় বানভাসি ব্যক্তিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে ফসলি জমিতে এখনো পানি আছে। টানা সাত দিন পানিবন্দী থাকায় খাদ্যসংকটসহ নানা দুর্ভোগে রয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার বানভাসি মানুষ।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে ১৬ জুন থেকে জামালপুরে বন্যা দেখা দেয়। প্লাবিত হয় রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি, মৎস্য খামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার ৫টি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ১৫৫টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছিল। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৭০১টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৬৯ হাজার ৭৬২।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে ধীরগতিতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছিল। গতকাল রাত থেকে দুর্গত এলাকায় খুব দ্রুত পানি নেমে যেতে শুরু করে। তবে দুর্গত এলাকার ফসলি জমিতে ও নিম্নাঞ্চলে পানি আছে। সবকিছু তলিয়ে ও কাদা জমে ঘাস নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষ।
ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, গত রাত থেকে পানি ভালোই কমছে। উজানের পুরো পানি নেমে গেছে। তবে নিচু এলাকার অনেক ঘরের আঙিনায় পানি এখনো আছে। পানি নামার পর বাড়িঘরের ও ফসলি জমিতে কাদা জমে রয়েছে। বানভাসি ব্যক্তিরা ঘরবাড়ি পরিষ্কার করতে শুরু করেছেন। মানুষের কাজকর্ম নেই। টানা সাত দিন কর্মহীন, পানিবন্দী ছিলেন মানুষ। তাঁদের পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী দেওয়া প্রয়োজন। এ পর্যন্ত শুধু চাল দেওয়া হয়েছে। শুধু চাল নিয়ে বন্যাকবলিত মানুষের কাছে গেলে, তাঁরা নিতে চান না। চালের সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া দরকার।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান বলেন, গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এক রাতের মধ্যেই পানি দুর্গত এলাকা থেকে নেমে গেছে। রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনা জেগে উঠেছে। তবে কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি থাকলেও, আজকের মধ্যে সেটিও নেমে যাবে। আপাতত আর পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই।