তানভীর আহমেদ হীরা:
জামালপুরে ১০৯ টাকায় পুলিশের চাকরি পাওয়ায় খুশিতে চোখের জলে ভাসিয়ে দিল ক্লান্তি আর হতাশার গ্লানি, গরীব মেধাবীর অসহায় পরিবারের সদস্যরা সন্তুষ্ট প্রকাশ। সফলতা হিসেবে দেখছে জেলা পুলিশ সুপার।
গত শুক্রবার ২৬নভেম্বর গভীর রাতে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে দিন থেকে রাত পযর্ন্ত পরীক্ষার সকল প্রক্রিয়া শেষে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ভাবে বিনা টাকায় মেধাবীরাই জয়ী হয়েছেন। পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন
অভিভাবকরা। এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় জেলার মোট ১৯২০জন পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করলেও মেধা তালিকায় উত্তীর্ন হয়েছে ৪৮জন এদের মধ্যে ৭জন নারী ও ৪১জন পুরুষ। প্রত্যেকেই সরকারি চালানের জন্য একশত ও ফি বাবদ আরো নয় টাকা খরচ করে মোট ১০৯ টাকায় সরকারি চাকরি পেয়েছে। এবারে যারা চাকরি পেয়েছেন তারা অধিকাংশ অসচ্ছল পরিবারে মেধাবী।
তাদের মধ্যে শরিফপুর ইউনিয়নের গোদাশিমলা গ্রামে ভেন চালক ফরিদ উদ্দিনের মেধাবী ছাত্রী ফাহিমা তাবাসসুম কোন মতে কষ্ঠ করে লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ একদিন অভাবের সংসারে বাবার অটোরিকশা চুরি হওয়ার পর সংসারে নিমে আসে ঘুর অন্ধকার। তাবাসসুম চাকরির জন্য ছুটাছুটি শুরু করে। টাকা ছাড়া নাকি চাকরি হয়না। চাকরির আশার ছেড়েই দিলো। কিন্তু ক্ষুধা আর জীবন বাচাঁতে মাথা উচু করে সম্মান জন কিছু করা দরকার, এরই মধ্যে জানতে পারলো জামালপুরে পুলিশে লোক নিবে কোন দতবির টাকা ছাড়া শুধু যোগ্য মেধাবী দের নিয়োগ প্রদান করা হবে।বিশ্বাস না হলেও একবার ঝাছাই করার জন্য পরীক্ষা দিলে পুলিশের বাহিনীর যে কথা সেই কাজ, মেধা তালিকায় নাম উঠে আসে ভেন চালকের মেয়ে তাবাসসুম। পরিবার হতবাক টাকা ছাড়া চাকরি হয়েছে, সংবাদ শুনে বাবা মেয়ে কান্নায় পরিবারে সকল দুঃখ কষ্ঠ চোখের চলে ভেসে দিয়ে, নতুন ভাবে বাচার স্বপ্ন দেখছে।
তার মত শহরের পাথালিয়ার অসহায় মো,আফছার আলী বাবা পরিবারের সবাইকে ফেলে অন্য সংসারে করছে। পরিবারে হাল ধরতে মা বুকে পাথর বেঁধে মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে এক মেয়ে প্রতিবন্ধি লালন পালন আর আফছারে লেখাপড়া করান। একে মায়ের যেমন কষ্টের সিমা নেই তেমনি পড়া শোনার খরচ হয় না। তাদের পক্ষ চাকরি একটি দুঃস্বপ্ন। অভাবে সংসারে চাকরি খুব জরুরি হয়ে গেছে সাহস করে একশ টাকা জোগার করে চালান জমা দেয়। পরীক্ষাও ভাল হয়েছে কিন্তু চাকরি হবে এমন ভাবাটা তার জন্য অসম্ভব ব্যাপার কিন্তু জেলা পুলিশ সেই অসম্ভব কে সত্য সম্ভব করে দিয়ে সেই অসহায় পরিবারের কাছে।
এভাবে সেই চাকরি তালিকা আরো অসহায় পরিবারে আছে, সদর উপজেলার নুরুন্দি ইউনিয়নের ৫নং ইটাইল দিনমজুর মোস্তফা কামাল ছেলে মো, সবুজ পারভেজ। মেলান্দহ উপজেলার হাজরা বাড়ীর ব্রাক্ষপাড়ার খেতমজুর মেধাবী মেয়ে নুসরাত জাহান। পৌরসভার অসুস্থ কৃষক মন্টু মিয়ার ছেলে নাম হোসেন। নাছির উদ্দিন আহমেদ পুলিশ সুপার,জানান,আইজি স্যারের দিক নির্দেশনায় মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সচ্ছ নিরপেক্ষ সম্পর্ন্ন করেছি। এখানে চাকরি নিতে কোন প্রকার অবৈধ টাকার লেনদেনের দতবিরের প্রযোজন হয় না। বিনা টাকায় পুলিশের চাকরি হয়েছে। এতে মানুষ সন্তুষ্ট হয়েছে। জেলা পুলিশ শুধু যোগ্যতা ও মেধার মুল্যায়ন করেছে। জেলা পুলিশের আরো একটা সফলতা। আমরা আগামীতেও এভাবেই বিনা টাকায় চাকরি দেব। ফলাফল ঘোষনার পরে প্রাথমিক ভাবে চাকরি প্রাপ্তদের সকলকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে জেলার পুলিশ সুপার।