Friday, March 31, 2023
Homeশেরপুরঝিনাইগাতীর পর্যটন কেন্দ্র অবকাশে ভ্রমনপিয়াসীদের পদভারে মুখরিত

ঝিনাইগাতীর পর্যটন কেন্দ্র অবকাশে ভ্রমনপিয়াসীদের পদভারে মুখরিত

ঝিনাইগাতী সংবাদদাতা : ঝিনাইগাতীর পর্যটন কেন্দ্র গজনী অবকাশে ছুটির দিনে ভ্রমনপিয়াসীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রে শুক্রবার/শনিবার ছুটির দিন ছাড়াও পর্যটকদের আগমনে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অবকাশের ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে সারি সারি শাল গজারি গাছ। রাস্তার ডান পাশে খোলা প্রান্তর আর দু-পাশে রকমারি পণ্যের দোকান। সামনের ক্যান্টিন পার হলেই পাহাড়ি ঢালু রাস্তা। এর পরেই হাতি, হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, বানর, কুমির, ক্যাঙ্গারু মৎস্য কন্যা, মাছ, ও পাখির ভাষ্কর্য। পাশের আঁকাবাঁকা পথে ঘন গাছের সারি লেকের দিকে চলে গেছে। তারপর ষ্টার ব্রিজ পেরিয়ে পাহাড়ের চুড়ায় পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে আরোহণ করলেই নজর কেড়ে নেয় ভারতের উঁচু নিচু পাহাড় আর সবুজের সমারোহ। প্রকৃতির এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন ভ্রমন পিয়াসীরা। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে ডিসপ্লে মডেল, তথ্য কেন্দ্র, গাড়ী পার্কিং জোন, ক্যান্টিন, মিনি চিড়িয়াখানা, বন্য প্রাণীর বিরল প্রজাতি পশু-পাখির ভাষ্কর্য। আরো আছে জীবযন্ত হরিন, ঔষধি ও সৌন্দর্য বর্ধক প্রজাতির বৃক্ষ এবং ফুলসহ বিভিন্ন রঙ্গের ফুলের বাগান। দেশের জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্র গজনি অবকাশ স্থানে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন শেরপুরের জেলা প্রশাসক গজনীর গহিন জঙ্গলের এই পাহাড়ি চূড়ায় গজনী অবকাশ কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে শেরপুর জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত অবকাশ কেন্দ্রের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ এখনও অব্যাহত রয়েছে। শেরপুর জেলা সদর থেকে অবকাশ কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। গাড়ি করে অবকাশ কেন্দ্রে পৌঁছাতে সময় লাগে বড়জোর ৪৫ মিনিট। যানজটমুক্ত যাতায়াতের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। পুরোটাই পাকা রাস্তা। ঢাকা থেকে মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে অবকাশ কেন্দ্রে। মৌসুমে লাখো ভ্রমণপিপাসুর পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে অবকাশ কেন্দ্র। অবকাশ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্পটে দর্শনার্থীদের জন্য নান্দনিক কারুকাজ ও শৈল্পিকতার স্পর্শে নির্মিত হয়েছে বন্যহাতী, ডাইনোসর, জিরাপ, হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মুক্তিযুদ্বের স্মৃতিসৌধ, মৎস্য কুমারী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতি, দৃষ্টিনন্দন পদ্মশিরি, গারো মা ভিলেজ, মাটির নিচে সুড়ঙ্গেপথে পাতাল পুরীতে ভ্রমণ করা সহ নতুন করে ঝুলন্ত ব্রিজ, জিপলাইনিং, মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর ইত্যাদি ভ্রমনপিপাসুদের মন আকৃষ্ট করবে।এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ভাস্কর্য। পাহড়ের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত হয়েছে সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। পাহাড়ের নিচ থেকে টওয়ারের উচ্চতা প্রায় ১৬৫ ফুট। টাওয়ারে উঠলে দেখা যাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মেঘালয় প্রদেশের রাশি রাশি পর্বত মালাসহ বৃস্তৃত্ব সবুজ বনভূমির ছোট বড় পাহাড়ি টিলা। দৃষ্টি-চক্ষুর বাইরে টাওয়ারে রক্ষিত ৬টি বাইনোকুলার দিয়ে দেখা যাবে দূর-দৃষ্টির দৃশ্য। গারো মা ভিলেজে গিয়ে ভাস্কর্যে দেখা যাবে কিভাবে গারো মায়েরা পিঠের কোলে তার সন্তানকে কাপড়ে বেঁধে শিশুদের লালন পালন করে। এ ছাড়াও সেখানে রয়েছে ভাস্কর্য ও কফি হাউস ও হোটেল। এখানে চিত্তবিনোদনের পাশাপাশি মুসল্লিদের জন্য মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে, চিলড্রেন পার্ক। পার্কে রয়েছে গজনী এক্সপ্রেস ট্রেন, নাগর দোলা, মেরী গো রাউন্ড ইত্যাদি খেলনার উপকরণ। অবকাশ কেন্দ্রে আসা আগতদের পানি সরবরাহের জন্য রয়েছে কয়েকটি রিং ওয়েল ও একটি গভীর নলকূপ। অবকাশ কেন্দ্রের ৩ তলা ভবনের ৮টি গেস্টরুমে আগত অতিথিদের জন্য সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভাড়া দেয়া হয়। এখানকার পাহাড়ি ঝর্ণাকে কৃত্রিম লেকে পরিণত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ জানান ভ্রমনপিপাসুদের নিরাপত্তা জোরদার সহ গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রকে নতুন করে সৌন্দর্যর কাজ করা হয়েছে । বর্তমানে জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার মহোদয়ের নির্দেশে আরো সৌন্দর্য করার জন্যে কাজ চলমান আছে বলে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments