মোহাম্মদ আলী : নাহ। তিনি ফেরেশতা নন। তিনি কোনো মহামানবও নন। অন্য আর আট দশজন ডাক্তারের মতো তারও হয়তো দোষ গুণ রয়েছে। তার চেম্বারে চিকিৎসা নিতে গেলেও ভিজট গুণতে হয়। তবে তফাৎ হচ্ছে তিনি কসাই নন। ডাক্তারীকে পেশার পাশাপাশি সেবা হিসেবেও নিয়েছেন তিনি। অন্য ডাক্তারের চেম্বারের মতো তার চেম্বারে রোগী দেখার আগে ভিজিট গুণতে হয় না। তাছাড়া তার চেম্বারে আসা অন্যান্য রোগীদের পাশাপাশি গরীব অসহায় রোগীদের তিনি বিনামূল্যে সেবা দেন। শুধু তা-ই নয়, অসুধ কিনার টাকা না থাকলে তাও দেন। যা শহরের অন্য ডাক্তারের বেলায় খুব একটা দেখা বা শুনা যায় না!
জামালপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের দন্ত বিভাগের ডাক্তার ইকরামুল ইসলাম হিটলু তালুকদার সম্পর্কে উপরের মন্তব্য করেছেন শহরবাসী।
দেলোয়ার হোসেন লিটন, মেরাজুল ইসলাম, আজাদ, ময়না ও মফিজুলসহ আরও কয়েকজন জানান,
বর্তমানে অর্থ উপার্যনের প্রতিযোগিতার যুগে মানুষগুলো যেন মেশিনে পরিণত হয়েছে। মানুষের প্রতি মানুষের মায়া মমতা উঠেগেছে। এখনকার যুগে মানুষ মানুষকে পণ্য করে, মানুষ মানুষকে জীবিকা করে। এক মানুষের বিপদের মধ্যে আরেক মানুষের রুটি রুজি। অন্যসব পেশাজীবি মানুষের মতো এর থেকে পিছিয়ে নেই ডাক্তাররাও। কতিপয় ডাক্তারের অর্থলিপ্সু মানসিকতার কারণে এই মহৎ পেশাধারীদেরকে কসাই উপাধি দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে, দন্ত চিকিৎসক ইকরামুল ইসলাম হিটলু তালুকদার তাদের মতো নয়। তিনি ডাক্তারিকে পেশা হিসেবে নিয়ে শুধু টাকাই আয় করেননি। আয় করেছেন মানুষের আস্থা ভালোবাসা ও সুনাম। তা যতটা না কর্মদক্ষতা দিয়ে তার চেয়ে বেশি আচার ব্যবহার দিয়ে। তার মানবিক গুণাবলীর মধ্যে ধৈর্য্য সহনশীলতা ও মানুষের প্রতি মমত্ববোধ উল্লেখযোগ্য। তার প্রায় দীর্ঘ এক যুগের কর্মজীবনে তিনি কোনো রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন এমন নজির নেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, শতাব্দীর বৈশ্বিক মহামারি ভয়াভহ করোনায় জামালপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের দায়িত্ব প্রাপ্ত ডাক্তারদের মধ্যে কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করেননি। কেউ আবার ভয়ে সেচ্ছায় অনুপস্থিত থেকেছেন। কেউ থেকেছেন গৃহবন্দী। সেই চরম দুঃসময়ে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা মানুষের সেবা দিয়েছেন ডাক্তার ইকরামুল ইসলাম হিটলু তালুকদার তাদের একজন।
সেসময়ে তিনি দন্ত বিভাগের ডাক্তার হয়েও সেবা দিয়েছেন সাধারণ রোগের। সেসময়ে তিনিই সবচেয়ে বেশি রোগী দেখতেন। বিশেষ করে হাসপাতালে আসা দরিদ্র রোগীদের কাছে তিনি একজন জনপ্রিয় ডাক্তার। তাকে কেউ কেউ বলেন গরীবের ডাক্তার।
ডাক্তার ইকরামুল ইসলাম হিটলু তালুকদার সম্পর্কে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সাবেক আরএমও ও সাবেক সিভিল সার্জন, করোনা যুদ্ধা, আরেকজন মানবিক ডাক্তার, শফিকুর রহমান বলেন, হিটলু ভাই একজন শুধু একজন ভালো মানুষই নয়, একজন ভালো ডাক্তারও বটে। তিনি করোনার সময় জামালপুরবাসীকে অনেক সেবা দিয়েছেন।