সরিষাবাড়ী সংবাদদাতা : জামালপুেরর সরিষাবাড়ি উপজেলা সংলগ্ন যমুনা নদীর পূর্ব পার্শ্বে দূর্গম চর এলাকায় মাজনাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মরহুম আতর আলী মন্ডলের ছেলে আফাজ উদ্দিন ওরফে হুদা সরকার (৬৫) এর মৃত দেহ ২ দিন পর পাওয়া গেল তার বাড়ির পাশে একটি ভুট্রা ক্ষেতের ভিতর। নিহত আফাছ সরকার হুদা গত শনিবার বিকালে ঘর হতে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তারপর তার আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা অনেক খোঁজাখুজির পর রোববার রাতে নিহত হুদার লাশ বাড়ির পাশে একটি ভুট্রা ক্ষেতের ভিতরে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। গতকাল সোমবার সকালে কাজীপুর থানার ওসিসহ পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
জানা যায়,সরিষাবাড়ি উপজেলার সীমান্তবতী দূর্গম চর এলাকায় মাজনাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মরহুম আতর আলী মন্ডলের ছেলে আফাজ উদ্দিন ওরফে হুদা সরকার। তিনি গত শনিবার বিকালে, অন্যান্য দিনের মত ঘর হতে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। ওই দিন রাতেই তার আত্মীয়স্বজনেরা খোঁজাখুজি শুরু করে। দুইদিন পর গত রোববার রাতে তার বাড়ির পাশে একটি ভুট্রা ক্ষেতর ভিতর দূর্গন্ধযুক্ত ক্ষত- বিক্ষত অবস্থায় হুদা সরকারের লাশ দেখতে পেয়ে তার আত্মীয়স্বজনেরা দ্রুত কাজীপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। সোমবার (১০ এপ্রিল) সকালে পুলিশ এসে শাশটি উদ্ধার করে। পরে লাশের সুরত হাল পরীক্ষার জন্য থানায় নিয়ে যায়। পারিবারিক সূত্রে আরও জানা যায়, নিহত আফাছ সরকার ওরফে হুদা অবিবাহিত এবং চির কুমার ছিলেন। পাকিস্তান আমলের আইএ পাশ। বেশ জানাশুনা ছিল তার। জীবদ্দশায় নিজের মুখে অনেকের কাছে বলেছেন, তার বিয়ে না কারণ। কলেজে পড়ালেখা করার সময়ে তিনি নাকি একটি মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার বাড়িতে বিল্ডিং না থাকায় মেয়েটি অনত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। সেই হতেই হুদা সরকার টাকা সংগ্রহ করে বিল্ডিং দেওয়ার জন্য দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত পরিশ্রম করছেন। এইজন্য তিনি বাড়ি ঘর না করে থাকতেন,তার ভাইদের বাড়ির সামনে একটি পরিত্যাক্ত বাগানের ঝোপ ঝাড়ের ভেতর। জলঝড় বন্যা খরা সাপ পোকা মাকড় কিছুই তাকে সরাতে পারিনি সেখান থেকে। তিনি গ্রামে গ্রামে লোকের কাছে টাকা লাভে লাগাতেন। এ ছাড়াও তিনি অনেক জমিজমা ও গরু বাছুর ক্রয় করে গরীব লোকদের কাছে বর্গা দিতেন। উল্লেখ্য তার পড়নের লঙ্গির কোচে সব সময় দশ/পনের লাখ টাকা জমা থাকতো। যখন তখন কেউ চাইলে সাথে সাথে টাকা কোচ থেকে বের করে দিয়ে দিত। কয়েক বছর আগেও সন্ত্রাসীরা সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফেরার পথে রাস্তায় সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করে ১৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয। এ নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা শালিস দরবারও হয়েছে কয়েক বার। কিন্তু সন্ত্রাসীরা ওই এলাকায়র এতই শক্তিশালি যে ভয়ে কেউ মুখ খোলে কিছু বলতে পারে না। তবে থানা পুলিশের ধারণা হয়তো টাকার লোভেই সন্ত্রাসীরা আফাছ উদ্দিন ওরফে হুদা পাগলাকে খুন করা হয়েছে।