আ.জা. ডেক্স:
পুলিশের কেউ চাঁদাবাজি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পুলিশ বাহিনীকে দুর্নীতিমুক্ত করতে শুদ্ধি অভিযান চলছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা কঠোরভাবে কাজ করছি। পুলিশের মধ্যে মাদকসেবী থাকলে তাকে বাহিনী থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। আমরা র্যানডমলি ডোপ টেস্ট করছি। পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। আমরা আমাদের ঘর পরিচ্ছন্ন করতে চাই। এছাড়াও মাদক সেবন করেন না কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িত, এমন পুলিশ সদস্যদেরকেও চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের ভ‚মিকা উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, সাংবাদিকরা কোটি কোটি মানুষকে মোটিভেটেড করতে পারেন। আপনি অপিনিয়ন বিল্ডার, অপিনিয়ন বিল্ড করা অনেক কঠিন কাজ। সবাই তা করতে পারেন না। যেহেতু আপনারা মুহূর্তের মধ্যে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারেন সেহেতু আপনাদের কলমের শক্তি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি। করোনা মোকাবিলা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, গত বছর আমরা সরকারের নির্দেশনায় ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবিলা করেছি, চলতি বছরেও আমরা একইভাবে কাজ করব। রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রী আনুশকা নুর আমিনের হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানান পুলিশ মহাপরিদর্শক। ক্র্যাবের বার্ষিক সাধারণসভা শেষে ড. বেনজির আহমেদ বলেন, এ ঘটনার পর আমরা আনুশকার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তাও তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পুলিশপ্রধান বলেন, মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হতে ময়না তদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপরই নিশ্চিত হওয়া যাবে হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা। এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. বেনজির আহমেদ বলেন, কলম সৈনিকরা (সাংবাদিকরা) দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তারা জাতিকে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেন লেখনীর মাধ্যমে। সাংবাদিক ও পুলিশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। আনুশকা হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা রাজধানীর রমনা জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান এই অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে মেয়েটির বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; যার দ্বারা সে ধর্ষণের শিকার হতে পারে। তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তাও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পরে বলা যাবে। পুলিশ ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্ত করছে। সেক্ষেত্রে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তবে এই ইস্যুকে সামনে এনে কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার না করার চেষ্টা করেন, সেদিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।