বেড়াতে আসা আত্মীয়কে চড় মারার ঘটনায় ভোলার লালমোহনে মন্দিরে বেঁধে মানসিক প্রতিবন্ধী এক যুবককে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
জয় চন্দ্র মিস্ত্রি নামে ওই যুবক ছোটবেলা থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী বলে জানান তার বাবা। বৃহস্পতিবার সকালে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
পরে লালমোহন থানা পুলিশ রাত ১০টার দিকে জয়কে উদ্ধার করে লালমোহন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনে। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই নির্যাতনকারী প্রধান অভিযুক্ত তাপস চন্দ্র মৃধাকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে তাপসের স্ত্রী প্রমীলা, অসীমের স্ত্রী রিনা রানীকেও গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে ১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড কর্তারহাট এলাকায় রাঁধা গোবিন্দ মন্দিরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে যুবককে দুজন মিলে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারছে। এ সময় যুবককে আর্তচিৎকার করতে শোনা যায়।
নির্যাতনের শিকার জয়ের বাবা শ্যামল দাস জানান, একই বাড়ির তাপসের এক আত্মীয় বেড়াতে এলে তাকে চড় মারে জয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাপস ও অসীম বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাঁধা গোবিন্দ মন্দিরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে তার ছেলেকে। তাকে মারতে মারতে লাঠি পর্যন্ত ভেঙে ফেলে। ওই সময় তার আর্তচিৎকারেও মন গলেনি তাদের। মারধরের সময় তাপসের ওই আত্মীয়ও সেখানে ছিল।
তিনি আরও জানান, জয় ১০ বছর বয়স থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী। তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় জয়। তার মানসিক চিকিৎসার জন্য পাবনাসহ বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হয়েছে। তবু জয়ের কোনো উন্নতি হয়নি। শ্যামল পেশায় একজন নরসুন্দর।
পাঙ্গাসিয়া বাজারে তিনি সেলুন চালান। বৃহস্পতিবার বিকালে খবর পেয়ে তিনি বাড়ি আসেন। জয়কে এর আগেও তাপসরা বেশ কয়েকবার এ রকম মেরেছে। তবে এবারের ঘটনা বেশ অমানবিক হওয়ায় ভিডিও করে কেউ একজন এটি ভাইরাল করে দেয়।
এ ব্যাপারে লালমোহন থানার ওসি মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, ভিডিওটি দেখে ওই এলাকায় গিয়ে নির্যাতনের শিকার যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। জয়ের বাবা শ্যামল বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে রাতে মামলা করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাপসসহ তার স্ত্রী ও অসিমের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।