Sunday, May 28, 2023
Homeদেশজুড়েজেলার খবরফরম ফিলাপ করতে গিয়ে ফারিয়া জানতে পারে রেজিস্ট্রেশনই হয়নি তার

ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে ফারিয়া জানতে পারে রেজিস্ট্রেশনই হয়নি তার

৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত নিয়মিত উপস্থিত হয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষায়। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় এসএসসির রেজিস্ট্রেশনও করেছে ফারিয়া আক্তার। টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে হঠাৎই সে জানতে পারে রেজিস্ট্রেশনই হয়নি তার।

ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ডিক্রিকান্দা লাভুমুন্সি বালিকা দাখিল মাদরাসার দাখিল পরীক্ষার্থী ফারিয়া আক্তার সঙ্গে। সে একই গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নূর ইসলাম মেয়ের।  

যাদের কারণে ফারিয়ার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হতে চলেছে তাদের বিচার অথবা ফারিয়ার ফরম ফিলাপের ব্যবস্থার দাবি করে রোববার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে মাদরাসার সামনের সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সহপাঠী ও এলাকাবাসীরা। এ সময় তারা মাদরাসার সুপারের নানা অনিয়ম দুর্নীতির কথাও তুলে ধরেন। একই দিন বিকেলে ফারিয়া তার দাখিল পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং যাদের অবহেলায় তার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হতে চলেছে, তাদের বিচার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

জানা গেছে, টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর ফরম ফিলাপের ফি নিয়ে মায়ের সঙ্গে মাদরাসায় যায় দাখিল পরীক্ষার্থী ফারিয়া। যাবতীয় ফি জমা দেওয়ার পর মাদরাসা থেকে জানানো হয় এ বছর তার পরীক্ষা দেওয়া হবে না তার। নবম শ্রেণিতে নাকি তার রেজিস্ট্রেশনই হয়নি। তাই নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করে ২০২৬ সনে পরীক্ষা দিতে হবে তাকে। টাকা ফেরত দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এ কথা শোনার পর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে ফারিয়া। শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হওয়ায় ছেড়ে দিয়েছে নাওয়া-খাওয়া। 

মাদরাসায় গিয়ে সুপারের দ্বারস্থ হন ফারিয়ার বাবা-মা। অনেক অনুনয় বিনয় করেন সুপারকে। এ বিষয়ে মাদরাসা সুপার অপারগতার কথা প্রকাশ করলে ঘটনাটি জানাজানি হয় গ্রামজুড়ে। মাদরাসা সুপার ও কর্তৃপক্ষের এমন গাফেলতির ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।

মানবন্ধনে কথা বলতে গিয়ে ফারিয়া ও তার মা হাবিবা আক্তার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় তারা জানান, এই প্রতিষ্ঠান থেকে ফারিয়া পঞ্চম শ্রেণি থেকে সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখন দাখিল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু নবম শ্রেণিতে তার রেজিস্ট্রেশন হয়নি, সেটা সুপার বা শিক্ষকদের কেউ কোনোদিন তাদেরকে বলেনি।

গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাইদুর রহমান জানান, সুপারের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে মাদরাসাটি আজ ধ্বংসের পথে। সেখানে লেখাপড়া হয় না। শিক্ষকরা ক্লাস না করে লুডু খেলে। মাস শেষে বেতন নেন। 

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন মোল্লা বাবুল বলেন, ফারিয়া যদি দাখিল পরীক্ষা না দিতে পারে তাহলে তার শিক্ষা জীনব অনিশ্চিত হয়ে পড়েবে। এর দায়ভার সুপারকে নিতে হবে এবং সুপারকে পদত্যাগ করতে হবে।

এ বিষয়ে মাদরাসা সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, ফারিয়ার রেজিস্ট্রেশন না হওয়ার বিষয়টি গত ২৮ ডিসেম্বর তিনি জানতে পারেন। এ বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন সোমবারে ভেতরে একটা ব্যবস্থা হবে। কার অবহেলায় এমনটি ঘটেছে জানতে চাইলে সুপার নিজেই দায়ভার স্বীকার করে বলেন, শ্রেণি শিক্ষক তাকে বিষয়টি জানালে আজ এমন পরিস্থিতি হতো না।

এদিকে জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুন নাহার মাকছুদা জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments