বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় কাতারের লুসাইলের আইকনিক স্টেডিয়ামে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। বিশ্বকাপ ফুটবলের শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচে দলের চেয়ে আলোচনায় আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি।
ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালের লড়াইটা আর্জেন্টিনার জন্য মোটেও সহজ হবে না বলে মনে করছেন অন্যদলগুলোর সমর্থকরা। এই সমীকরণে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের লড়াই মাঠে শুরু হবার আগেই দু’দলের পক্ষে থাকা সমর্থকরা এখন ব্যস্ত তর্কযুদ্ধে। ফাইনালের এই দিনে দল বদলের ঘটনা ঘটিয়েছে ব্রাজিলের এক বেরসিক সমর্থক।
আর্জেন্টাইন দলপতি লিওনেল মেসির খেলায় মুগ্ধ হয়ে রংপুরে ব্রাজিলের এক সমর্থক নাম লিখিয়েছেন আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সারিতে। দুধ দিয়ে গোসল করে ব্রাজিলের জার্সি খুলে গায়ে জড়িয়েছেন লিওনেল মেসির নাম্বার টেন জার্সি। ঘোষণা দিয়ে ব্রাজিল ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন আর্জেন্টিনায়। ফাইনালের দিনে ব্রাজিল সমর্থকের এমন কাণ্ডে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা খুশি হলেও ক্ষুদ্ধ ব্রাজিল ভক্তরা।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর লালবাগ এলাকায় নিজ বসতবাড়ির সামনে বড় ব্যানার টাঙিয়ে দল বদল করেন ৫০ বছর বয়সী ফুটবল অনুরাগী আতু মিয়া। এ সময় আর্জেন্টাইন ফ্যানস ক্লাবের সদস্যরা ছাড়াও স্থানীয় এলাকার লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাজিল ছেড়ে আর্জেন্টিনার ভক্ত বনে যাওয়া আতু মিয়া বলেন, এখন আর আগের মতো ব্রাজিলকে ভালো লাগে না। এবার তারা ভালো খেলেছে, কিন্তু আশানুরূপ হয়নি। তবে আর্জেন্টিনা দলের খেলোয়াড় লিওনেল মেসির খেলা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। দলটির খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস আর মেসির দুরন্ত প্রচেষ্টা অভিভূত করার মতো। সেই অনুভূতি থেকে আমি ব্রাজিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আর্জেন্টিনার সমর্থক হিসেবে সবার সামনে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আজকে যদি আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতে যায়, এটি আমার জীবনের জন্য শ্রেষ্ঠ দিন হবে। আর যদি হেরে যায় সেটাও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে আমি বিশ্বাস করি আগামীতে লিওনেল মেসির মতো আর খেলোয়াড় আমরা সহজেই দেখতে পাব না। আমি চাই আজ আর্জেন্টিনা জিতুক।
এদিকে ফাইনাল খেলা শুরুর আগেই রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকায় আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সমর্থকরা আয়োজন করেছে ভূরিভোজ। সেখান জবাই করা হয়েছে একটা আস্ত গরু। ভূরিভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ব্রাজিল সমর্থকদেরও। তারও আগে বিকেল থেকে হারাগাছসহ রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় গান-বাজনা ও পক্ষে-বিপক্ষে তর্কযুদ্ধ। রাতে টাউন হল হল মাঠে ডিজিটাল বড় পর্দায় খেলা দেখা হবে।
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর দিন থেকে টাউন হলের মাঠে বিরাট পর্দা লাগানো হয়েছে। রয়েছে উচ্চ শব্দের সাউন্ড সিস্টেম। আর্জেটিনা ফ্যানস ক্লাবের পক্ষ থেকে এই খেলা দেখার আয়োজন ফুটবল উৎসবের মাত্রা বাড়িয়েছে দ্বিগুণ। প্রতিদিনই সেখানে বড় পর্দায় খেলা দেখানো হয়েছে। হাজারো মানুষের ভিড়ে দর্শকরা উপভোগ করেছে প্রতিটি খেলা। আজ সেই ফুটবল উৎসবের শেষ বাজি।
আর্জেন্টিনা ফ্যানস ক্লাবের সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, ফাইনালটা ফাইনালের মতোই যেন হয়, এটা আশা করছি। আজ সকালে বেশ কয়েকজন ব্রাজিল সমর্থকরা দল পাল্টিয়ে আমাদের দলে ভিড়েছে। ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই আনন্দ, বিনোদন, তর্ক-বিতর্ক, হৈ-হুল্লোড়। টাউন হল মাঠে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ খেলা উপভোগ করেছেন। এভাবে বড় পর্দায় হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে খেলা দেখার মজাই আলাদা। সকল দর্শকের মধ্যেও ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ। আজ রাতটা আমরা এমন আনন্দ-উৎসবের মিছিলে শেষ করতে চাই।