উৎপল কান্তি ধর : আচ্ছা বলুন তো মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যে ২২ জন সৈনিকের পক্ষে কতো মানুষকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা সম্ভব?
ভাবছেন হয়তো ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ, আরো বেশী হলে ৬০০ কিংবা ৭০০ মানুষ ! তারচেয়ে বেশী হলে হাজার খানেক! মাথাটা ঘুরছে নির্ঘাত?
না সংখ্যা এতো কম নয়। সংখ্যাটা ১২ হাজারের বেশী। জ্বী। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সংখ্যাটা এটিইক। মুক্তিযুদ্ধ তো বটেই গোটা পৃথিবীতে স্বল্প সময়ে একক স্থানে সর্ববৃহৎ গণহত্যা চুকনগর গণহত্যা।
২০ মে, ১৯৭১। দিনটি ছিলো বৃহস্পতিবার। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর।
খুলনা ও বাগেরহাট থেকে ভদ্রা নদী পাড়ি দিয়ে নেমেছে মানুষের ঢল। উদ্দেশ্য প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়া!
সকাল এগারোটার কাঁটা ছুঁয়েছে ঘড়ি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুটি দল একটি ট্রাক ও একটি জিপ গাড়িতে এসে চুকনগর বাজারের উত্তর প্রান্তে ‘‘কাউতলা’’ নামক একটি স্থানে এসে থামে। পাতখোলা বাজার থেকে তারা একটানা গুলি চালানো শুরু করে। পরবর্তীতে চুকনগর বাজারের দিকে অগ্রসর হয়। বিকেল তিনটা চলতে থাকে পাশবিক এই হত্যাকান্ড। সেই ভদ্র নদীর পানি যমে গিয়েছিলো রক্ত বন্যায় স্বাধীনতার বহু বছর পরেও সেই নদীর মাছ কেউ খায়নি।
ঐ নৃংশস গণহত্যায় অলৈাকিকভাবে বেঁচে যায় কয়েক মাস বয়সী এক শিশু। সে তার মৃতা মায়ের বুকে দুধ খাওয়ার চেষ্টা করছিলো। এরশাদ মোরল নামের এক গ্রামবাসী ঐ শিশুকে উদ্ধার করে লালন পালন করেন। কন্যা শিশুটির নাম সুন্দরী বালা দাসী। তিনি এখনোও বেঁচে আছেন। বিন¤্র শ্রদ্ধা জানাই শহীদদের প্রতি।