মোহাম্মদ আলী: যান্ত্রিক জটিলতায় জামালপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বড় ফিল্ম সংক্রান্ত এক্স-রে গুলো কয়েক মাস যাবত বন্ধ। এ হাসপাতালে আসা রোগীরা অগত্যা সে সক্রান্ত এক্স-রে গুলো এদিক সেদিক থেকে করিয়ে নিচ্ছেন বাড়তি টাকা দিয়ে। আর সে সুযোগ নিচ্ছেন পাশের বক্ষব্যাধি হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট মোঃ মোফাজ্জল হোসেন। তিনি সুকৌশলে তার দালাল লেলিয়ে দিয়ে সে সংক্রান্ত রোগীদের ডেকে নিয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে তার হাসপাতালে এক্স-রে করিয়ে দিচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এক্স-রে ফি ২শ১০ টাকার স্থলে তিনি নিচ্ছেন ৪শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বড় কথা আদায়কৃত অর্থের অনুকূলে কোনো রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি তহবিলের সে টাকা উঠছে তার পকেটে। এছাড়া বাড়তি টাকা গুণে দরিদ্র পীড়িত রোগীরা হচ্ছেন প্রতারিত।
ওই হাসপাতালের জনৈক কর্মচারীর এমন তথ্যের ভিত্তিতে কয়েকদিন যাবত অনুসন্ধান করে অভিযোগের মিল পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য যে, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মতে, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে সন্দেহভাজন যক্ষারোগী ব্যাতিত আর কোনো এক্স-রে করার নিয়ম নেই। কিন্ত, সে নিয়মের তোয়াক্কা না করে মোফাজ্জল সব ধরনের এক্স-রে করে থাকেন।
অনুসন্ধানে মতে, গত ১ জানুয়ারি বক্ষব্যাধি হাসপাতালে যারা এক্স-রে করিয়েছেন তাদের মধ্যে আলাল, রুবেল ও আমিনুলসহ আরও কয়েকজন রোগীর সাথে বলে জানা যায় তাদের সবার কাছ থেকে নির্ধারিতের চাইতে বেশি ফি নিলেও কাউকেও রসিদ দেয়নি মোফাজ্জল।
সদর উপজেলার মেষ্টা থেকে আসা আমিনুল ইসলাম ( ৬৫) বলেন, আমাকে শঁন এক্স-রে করে দিবে বলে জেনারেলের হাসপাতালের এক্স-রে রোমের সামনে থেকে একটি ছেলে বক্ষব্যধি হাসপাতালে ডেকে নিয়ে আসে। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এক্স-রে রোমের ভিতরে নিয়ে অপারেটর মোফাজ্জল ৬শ টাকাও নেন। আমার কাপড় খোলে এক্স-রে করবে এমন সময় আমার স্ত্রী টাকার রসিদ চাইলে ওই লোক আমাকে টাকা ফেরত দিয়ে রোম থেকে বের করে দিয়েছে। অথচ আমার সামনে আরও কয়েকজনকে সে ওই ধরনের এক্স-রে করিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, মোফাজ্জল একজন দুর্নীতিবাজ কর্মচারী। সে এই কয়েক মাসে এক্স-রে বাণিজ্য করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এবিষয়ে স্থানীয় একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। তারপরেও বন্ধ হয়নি তার অবৈধ বাণিজ্য। এভাবেই সে সামান্য একজন টেকনিশিয়ান হয়ে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে ও জনগণকে ঠকিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক বনেগেছে। অথচ তার সম্পর্কে সব জেনে শুনেও রহস্যজনক নীরব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ!
মেডিকেল এ টেকনোলজিস্ট মোফাজ্জল হোসেনের কাছে কি কি ধরণের এক্সরে হয়? গড়ে দিনে কতটি হয়? এবং আদায়কৃত অর্থ কোথায় কার কাছে জমা হয় জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি।
এব্যাপারে জামালপুর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার, ডাঃ স্বাগত সাহা সব শুনে বলেন, এখনো যে সে এসব করছে তা আমি জানতাম না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। তাকে এর আগেও সতর্ক করা হয়েছিল। তারপর সে যেহেতু শোধরায়নি। তাহলে এখন আমাকে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। তারায় তার ব্যবস্থা নিবেন।