আ.জা. ডেক্স:
বঙ্গবন্ধুর চার খুনির রাষ্ট্রীয় খেতাব ও পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যোগদানের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান। শিগগিরই এ বিষয়ে গেজেট জারি করা হবে বলেও জানিয়েছেন মোজাম্মেল হক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর চার খুনির রাষ্ট্রীয় খেতাব ও পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করলে আপনারা পাবেন। এর আগে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এর আগে গত ৯ ফেব্রæয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত চার খুনির রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সুপারিশ করা হয়। শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই খুনের নেপথ্যে রয়েছেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেয়া হয়। এ ছাড়া শরিফুল হক ডালিম ‘বীর উত্তম’, নূর চৌধুরী ‘বীর বিক্রম’, রাশেদ চৌধুরী ‘বীর প্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিন ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। তাদের খেতাব বাতিলের বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে জামুকার সদস্য ও সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছিল।
এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া হেফাজতে ইসলামের কোনো নেতাকর্মীকে ভবিষ্যতে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে জানিয়েছেন মোজাম্মেল হক। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে কমিটির ষষ্ঠ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। হেফাজতে ইসলাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খুবই নগণ্য সংখ্যক, কয়েকজন হাতেগোনা… গোয়েন্দা সংস্থা চিহ্নিত করেছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, ভবিষ্যতেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, প্রমাণ হলে ব্যবস্থা আমরা ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, কোনো ভুল মেসেজ যদি জাতির সামনে গিয়ে থাকে- বোধহয় আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার হয়রানি করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। কোনো অবস্থায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হবে না, সে রকম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অপরাধের বিচার হবে, অপরাধী হিসেবে। কোনো দলীয় বা স¤প্রদায়ের পরিচয়ে আইনের অপব্যবহার না হয়, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। মোজাম্মেল হক বলেন, কিছু বিদেশি নাগরিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তারা দেশে যেতে পারছেন না। নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। বিমান বন্ধ, কেউ বলছে টাকা নেই। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী- তাদের অধিকাংশই ক্রাইমের (অপরাধ) সঙ্গে জড়িত। তাদের আইনের আওতায় এনে সেইফ জোনে রাখা বা যদি টাকা না থাকে সরকারিভাবে টিকিট সংগ্রহ করে তাদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত (ভার্চুয়ালি ও সশরীরে) ছিলেন।