মাদারগঞ্জ সংবাদদাতা : গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুন হওয়ায় পশু পালনে ও দুধ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে মাদারগঞ্জ উপজেলার খামারিদের। সকল খরচ মিটিয়ে আয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন খামারিরা। দুগ্ধ শিল্প রক্ষায় গো-খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন খামার মালিকেরা। গত ৪/৫ মাসে গরুর খাবারের দাম দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পশু খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারি ও পশু পালন কারিরা। ভুসি ফিডসহ অনুষঙ্গিক পশু খাদ্য কিনতে না পেরে অনেকেই গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।লোকসানের আশস্কা থাকলেও আসন্ন কুরবানি ঈদে দাম বেশী পাওয়ার আসায় অনেকেই কষ্ট করেও ধরে আছেন গরুর খামার। এ অবস্থা চলতে থাকলে গরু লালন পালন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে পারে বলে ধারণা করছেন খামারিরা। পশু খাদ্যের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে,য়ে গমের মোটা ভুসির দাম ছিল ৩২ থেকে ৩৪ টাকা আর চিকন ভুসির দাম ছিল ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা । এখন সেই মোটা ভুসি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫৫-৬০ টাকা আর চিকন ভুসি ৬০-৭০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। তিলের খৈল প্রতি কেজি ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬২-৬৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভুট্টা,চালের খুদ এবং খৈলের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। বাজারে ২০-২৫ টাকার ভুট্টার পাউডার এখন ৪০-৪৫ টাকা, ২০-২১ টাকার চালের খুদ ৩৫-৪০ টাকা,মাস কালাইয়ের ভুসি ৩০-৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫-৫০ টাকা,২৫ কেজি বস্তার মিক্রাফিড় ১ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১১-১২শ টাকা হয়েছে। উন্নত মানের ফিড়ের দামও বস্তাপ্রতি ১ হাজার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৪০০-১৫০০শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ভার খড়ের দাম বেড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০-৪০০ টাকা হয়েছে।মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ গ্রামের গো-খামারি জাহিদ মিয়া বলেন। দুধের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়েই খাবার কিনতে হচ্ছে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় দুধ উৎপাদন করে তেমন লাভ হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন যে আমার খামারে তিনটি বাছুর সহ ৬টি গরু আছে। প্রতিদিন দুবেলায় ১৫ থেকে ১৭ কেজি দুধ পাওয়া যায়। ভুসি ও খড় বাবদ ৬ থেকে ৭শ টাকা খরচ হয়। দুধ বিক্রি করে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা আসে। দুই থেকে তিন মাস আগে ১ কেজি দুধের উৎপাদন খরচ ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০টাকা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও মিলে দুধের দাম তেমন একটা বাড়েনি। ফাজিল পুর গ্রামের খামারি আলেপ উদ্দিন বলেন,আমি প্রতি বছর ২-৩ টি করে ষাড় গরু পালন করে কুরবানি ঈদে বিক্রি করে থাকি কিন্তু এ বছর গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুন হওয়ায় আর গরু কিনা হয়নি। গরু পালনে এখন পুরাই লোকসান।ফজিলপুর বন্ধন দুগ্ধ খামার সমিতির সভাপতি বলেন আমার খামারে ৭টি বাছুর সহ ৩৫টি গরু রয়েছে। ১ থেকে ২ মাস আগে প্রতিমাসে আমার ঘরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা এখন খরচ হচ্ছে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা । এই অবস্থা চলতে থাকলে গরু পালন বন্দ করতে হবে। এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন উপজেলায় বর্তমানে গো-চারণ ভুমি ও ঘাসের প্রেডাকশন কম,গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুন বেড়েছে।সরকার ভর্তুকি দিলে হয়তো গো-খাদ্যের দাম কমে যেতে পারে।