ময়মনসিংহের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মোজাম্মেল হোসেনকে হত্যার ঘটনায় তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুক্তিপণ না পেয়ে মোজাম্মেলকে শ্বাসরোধে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাই করেন তারা।
শনিবার (৪ জুন) বিকেলে জেলা গোয়েন্দা শাখা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আবুল মনসুরের ছেলে আবু রায়হান, নুর মো. মিলনের ছেলে মোজাম্মেল হক, আব্দুল লতিফের ছেলে জিয়াউর রহমান সাইদুল।
এর আগে শুক্রবার (৩ জুন) রাত ১০টার দিকে জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত মোজাম্মেল হক নান্দাইল উপজেলার ফরিদ মিয়ার ছেলে। প্রতিদিনের মতো ১৪ মার্চ সকালে মোজাম্মেল ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোজাম্মেলের মোবাইল ফোন থেকে তার বাবা ফরিদ মিয়াকে কল দিয়ে ২০ হাজার টাকা বিকাশে দিতে বলেন এক ব্যক্তি। টাকা না দিলে মোজাম্মেলকে মেরে অটোরিকশা নিয়ে যাওয়া হুমকি দেন। কিন্তু টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে মোজাম্মেলকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে তার পরিবার।
ওসি আরও বলেন, ১৫ মার্চ সকালে উপজেলার আঠারবাড়ী ঈশ্বরগঞ্জ সড়কে মৃগালী এলাকায় রাস্তার পাশে মোজাম্মেলের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। মোজাম্মেলের বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার পর ওই দিন রাতেই মোজাম্মেলের বাবা ফরিদ মিয়া অজ্ঞাতনামা আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করলে ৩ জুন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত অটোরিকশা ও মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে যাত্রীবেশে মোজাম্মেলের চালিত অটোরিকশা ভাড়া করে ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন গ্রেফতাররা। পরে রাতে ময়মনসিংহ থেকে মোজাম্মেলের অটোরিকশায় ঈশ্বরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা। ঈশ্বরগঞ্জ এসে চালক মোজাম্মেলের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তার বাবা ফরিদ মিয়াকে ফোন করে বিকাশে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেন। টাকা না দেওয়ায় ছিনতাইকারীরা মোজাম্মেলকে চালকের আসন থেকে নামিয়ে পেছনে দুজনের মাঝে বসান। তাদের একজন অটোরিকশা চালাতে থাকেন। যাত্রীর আসনে বসা মোজাম্মেলকে অন্য দুজন তার গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। মোজাম্মেলের মরদেহ মৃগালী এলাকায় ফেলে পালিয়ে যান তারা।