আ.জা. ডেক্স:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার মধ্যেই রাজধানীসহ সারাদেশে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের (২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৫টি ভেন্যুতে একযোগে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে (১০০ নম্বরের নৈব্যক্তিক প্রশ্নপত্র) এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার মোট এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন পরীক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিল। গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবন, ব্যবসায় অনুষদ ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন ও উদয়ন স্কুলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা উপলক্ষে অভিভাবকদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। সবার মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব মানতে অনীহা লক্ষ করা গেছে অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সামাজিক দুরত্ব মানার সুযোগও ছিল না। সকাল ১০টায় মেডিকেল প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শেষ হয় বেলা ১১টায়। এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। কোনো কোনো পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ৪-৫ জন অভিভাবক এসেছেন। অভিভাবকরা বলছেন, তারা অনেকেই ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন। পরীক্ষার্থীদের কাছে মোবাইল ফোন নেই, তাই তারা কেন্দ্রের সামনে ভিড় করেছেন। এ সময় অভিভাবকদের সামলাতে পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে। আর পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছর ১ লাখ ২২ হাজার ৭৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। সেই হিসাবে এ বছর আসনপ্রতি ২৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করতে এসে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। আমাদের যেহেতু সামনে পরীক্ষা আছে তাই অভিজ্ঞতা নিতে এসেছি। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। সামনে আরও অনেক পরীক্ষা আছে সেখানে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জানান, করোনা পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তাদের নির্দেশনা অনুসারে পরীক্ষার্থী প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ ও মাস্ক পরিধান করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। তিনি নিজেও ঢাকা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে সুন্দর ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা গ্রহণ করতে দেখেছেন বলে জানান। কবে নাগাদ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে, জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ না বললেও দ্রæততম সময়ে ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি। বিগত বছরগুলোতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা হতো। কিন্তু এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সময় একটু বেশিই লাগতে পারে। তবে দ্রæত ফলাফল প্রকাশের প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানান ডা. এ কে এম আহসান হাবিব। নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞদের একটি দল পরীক্ষা করবে। সার্বিক ফলাফল তৈরির দায়িত্ব তাদেরকেই দেয়া হয়েছে। গত বছর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা যৌথভাবে ফলাফল তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু এবারই প্রথম বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ফলাফল তৈরি হচ্ছে। তবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ একাধিক বিশেষজ্ঞ ফলাফল তৈীলর সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় পরামর্শ দিচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।