শেরপুর সংবাদদাতা : বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও প্রধান শিক্ষকের পদ না ছাড়ার অভিযোগ উঠেছে পাইকুড়া এআরপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুন্নবী আজাদের বিরুদ্ধে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ৬০ বছর পূর্ণ হয় অভিযুক্ত এ প্রধান শিক্ষকের। চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরেও অবসরে না গিয়ে এবং দায়িত্ব হস্তান্তর না করে বিদ্যালয় হাজিরা খাতায় নিজে স্বাক্ষর করে বেআইনিভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন যা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এম.পি.ও ২০২১ বিধি ১১.১১ নীতিমালার পরিপন্থি। নিয়ম অনুযায়ী, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে চাকরিতে বহাল থাকার কোনো সুযোগ নাই। চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯ দিন পরও পদ না ছাড়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন শিক্ষক ও এলাকায় শুরু হয়েছে তোলপাড়।
জানা গেছে, গত বছরের শেষের দিকে প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ তার স্কুলের ভর্তির রেজিষ্টারকে ভিত্তি করে অবৈধ ভাবে ভোটার আইডি কার্ড ও সকল পরিক্ষার সনদের জন্ম তারিখ সংশোধন করেন। তার পূর্বের জন্ম তারিখ হলো ১ জানুয়ারি ১৯৬৩। কিন্তু তিনি পরিবর্তন করে নতুন জন্ম তারিখ তৈরি করেন ১০ সেম্পেম্বর ১৯৬৪। অবসরের আগে আগে অবৈধভাবে চাকুরিতে থাকার জন্য কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগীতায় তিনি এই পরিবর্তন গুলো করেন। এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার বরাবর স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা লিখিও অভিযোগও করেছেন তার বিরুদ্ধে।
স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মতিউর রহমান বলেন, নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব হস্তান্তর করে তিনি অবসরে যাবেন এটাই সত্যি। কিন্তু তিনি কোন ক্ষমতা ও নিয়মের বলে এখনও দায়িত্ব পালন করছেন তা আমার বোধগম্য নয়। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তার ভাই ও স্থানীয় চেয়ারম্যান তার ভাতিজা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারেন না। তিনি স্কুল টিতে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। তিনি প্রধান শিক্ষকের অবৈধভাবে দায়িত্বে থাকায় নিজেও পদ বঞ্চতি হচেছর বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, আমি গেজেট অনুসারেই কাজ করেছি। যেহেতু গ্যাজেট অনুযায়ী বয়স সংশোধনের সুযোগ আছে তাই আমি বয়স সংশোধন করেছি। এখন আমি এমপিও এর সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করবো। যদি সময় বৃদ্ধি হয় তাহলে দায়িত্বে থাকবো না হয় ছেড়ে দিবো।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রেজুয়ান বলেন, এমপিও কপি অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে তার চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি তার দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে নিয়মের বাইরে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তার ভোটার আইডি কার্ড ও শিক্ষাগত সনদের সাথে এমপিও কপির গরমিল থাকায় বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। যদি বোর্ড গ্রহন করে তবে তিনি দায়িত্বে নতুন করে দায়িত্বে আসবেন । এখন দায়িত্বে থাকার সুযোগ নেই। তবে তার আবেদন গ্রহন হবে বলে আমার মনে হয়না। তাকে দ্রুত দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিত চিঠি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।