Sunday, May 28, 2023
Homeআন্তর্জাতিকরাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের কী হলো?

রাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের কী হলো?

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রথম রাতেই মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গ, সারাতোভসহ রাশিয়ার বড় বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভ করেছিলেন প্রতিবাদীরা। এসময় তাদের মুখে ছিল ‘নো টু ওয়ার’ বা ‘যুদ্ধ নয়’ স্লোগান। সেই রাতেই দেশব্যাপী অন্তত ১ হাজার ৯০০ জনকে আটক করে রুশ নিরাপত্তাবাহিনী।

এভাবে ব্যাপক ধরপাকড়ের কারণে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়ায় বড় মাপের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ ঝিমিয়ে পড়ে। একই সময় দেশটিতে তথাকথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে মিছিল-সমাবেশ শুরু করে সরকারপন্থিরা।

মস্কো-সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো শহরগুলোতে আজ জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক। বার কিংবা মিউজিক ফেস্টিভ্যালগুলো লোকে লোকারণ্য। বিদেশি নিষেধাজ্ঞা আর স্বদেশি সরকারের নতুন নতুন বিধিনিষেধের মধ্যে জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে রুশ জনগণ। রাশিয়ার অর্থনীতিও এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। যারা ভেবেছিলেন, দেশটিতে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের জেরে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে এবং পুতিনকে ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেলবে, তাদের হতাশা কেবলই বাড়ছে।

ইউক্রেনীয় সমাজবিজ্ঞানী ভলোদিমির ইশচেঙ্কো বলেন, রুশ অভিজাত ও দমনমূলক প্রতিষ্ঠানগুলো পুতিনের চারপাশে একত্রিত হলে বিশাল বড় বিক্ষোভও সফল হবে না।

রাশিয়ায় বিক্ষোভ-সমাবেশ এখন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিক্ষোভ করতে হলে আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। তাছাড়া প্রতিবাদীদের সাজা দেওয়ার বিষয়টিও বিশেষভাবে বিবেচ্য। গত ২০ বছরে রাশিয়ায় ভিন্নমতাবলম্বী আন্দোলনের বহু সদস্য ও নেতাকে জেলে বা নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে হত্যাও করা হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রাশিয়ায় বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল, রেডিও স্টেশন ও সংবাদপত্র হয় জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, নাহয় কার্যক্রম বিদেশে সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

মস্কোর সঙ্গীতজ্ঞ ও বামপন্থী কর্মী কিরিল মেদভেদেভের বিরুদ্ধে বর্তমানে দুটি মামলা চলছে- একটি পিকেটিং, অন্যটি মস্কোয় যুদ্ধবিরোধী কনসার্ট আয়োজনের অভিযোগে। তার মতে, সোভিয়েত-পরবর্তী যুগে এখনকার নিপীড়ন সবচেয়ে গুরুতর ও অযৌক্তিক।

কিরিলের কথায়, আপনি যুদ্ধকে যুদ্ধ বলতে পারবেন না, ‘বিশেষ অভিযান’ বলতে হবে, ইত্যাদি। নিপীড়ন সর্বাত্মক নয়, তবে এটি [সরকারের] পূর্বের যুক্তিকে মারাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে: এলোমেলোভাবে যেকোনো লোককে এবং অবশ্যই সুপরিচিত ও প্রভাবশালী বিরোধীদের টার্গেট করা, যেন সবাই ভয় পায়।

রুশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষক ওভিডি-ইনফোর তথ্যমতে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরোধী কার্যকলাপের জন্য রাশিয়ায় ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দেশটির নতুন আইনে ‘সামরিক অভিযান’ নিয়ে ‘ভুয়া খবর’ ছড়ালে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যারা সাজা পেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগকেই আর্থিক জরিমানা নাহয় সংক্ষিপ্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments