Thursday, June 8, 2023
Homeঅপরাধরৌমারীতে বিয়ের প্রলোভনে যুবতীকে ধর্ষনের চেষ্টায় যুবক আটক

রৌমারীতে বিয়ের প্রলোভনে যুবতীকে ধর্ষনের চেষ্টায় যুবক আটক

রৌমারী সংবাদদাতা: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে জনৈক যুবতীকে ধর্ষণ চেষ্টায় মনিরুজ্জামান বিজয় (১৮) কে হাতে নাতে আটক করেছে অভিভাবক। আটককৃত যুবক উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের পাখিউড়া গ্রামের প্রধান শিক্ষক ও চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলালের পুত্র। প্রভাবশালীর ভয়ে থানায় অভিযোগ দিতে পারছেনা পরিবার। ৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চরশৌলমারী ইউনিয়নের পাখিউড়া গ্রামের পাখিউড়া দ্বীমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলালের ২য় পুত্র মনিরুজ্জামান বিজয় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পুর্ব চরশৌলমারী গ্রামের জনৈক ব্যাক্তির কন্যার সাথে কয়েক মাস থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
এ সূত্রে প্রেমের সম্পর্কের কিছু কথা ও বিয়ের আলোচনা করার কথা বলে বৃহস্পতিবার রাতে বিজয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার কৌশলে প্রেমিকার বাড়িতে যায়। পরে রাত পনে ১২ টার সময় উভয় দেখা করার পর প্রেমিক ডেকে নেয় প্রেমিকার নিজ ঘড়ে। পরে ধর্ষণের চেষ্টা করলে এ সময় ওই যুবতীর ধস্তধস্তির শব্দে তার পিতা দৌড়ে এসে দরজা খুলে দেখে চৌকির নিচে পালিয়ে থাকা বিজয়কে আটক করে। পরে চিৎকারে এলাকার মানুষ বাড়ীতে সমবেত হয়ে উভয়কে এক ঘরে আটক রাখা হয়।
অভিযুক্ত বিজয়কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, মেয়ের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক। তার সাথে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয় এবং রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে গোপনে তার বাসায় যাই। এমতাবস্থায় মেয়ের বাবা ও পরিবারের লোকজন আমাকে আটক করে। বিয়ের বিষয়ে বললে সে বলে অভিভাবক যাহা করবে তাতে আমি রাজি।
ধর্ষণ চেষ্টার জনৈক যুবতীর পিতা বলেন, আমার মেয়ের থাকা ঘর থেকে একটু দুরে আমি ও আমার স্ত্রীসহ ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত পনে ১২ টার সময় আমার মেয়ের ঘরে ধস্তাধস্তির শব্দ পাওয়া যায়। তখন আমি উঠে গিয়ে দরজা খুলতে বলি। মেয়েকে দরজা খুলতে দিচ্ছে না। পরে জোড়পুর্বক দরজা খোলার পর দেখি বিজয় চৌকির নিচে পালিয়ে আছে। এমতাবস্থায় বাড়ির লোকজন মিলে বিজয়কে আটক করি। এবিষয়ে বিজয়ের পিতা চেয়ারম্যান দুলালের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মহির উদ্দিন মাষ্টার, সাবেক মেম্বার শুকুর আলী, বর্তমান মেম্বার মোহাম্মদ আলীসহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিরসনের লক্ষে বাড়িতে রেখে যায়। আজ দুইদিন অতিবাহিত হলেও কোন সমাধান পাইনি। এর মধ্যে বিজয়ের অভিভাবক চেয়ারম্যান একেএম সাইদুর রহমান দুলাল ছেলেকে উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ বিজয়কে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে মেয়েকে নিয়ে আমরা হতাশায় ও মানুষিক ভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি।
এবিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মহির, মেম্বার শুকুর, মেম্বার মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা অভিভাবকদের সাথে সমাধানের চেষ্টা করছি। তারা সাড়া দেয়নি।
অভিযুক্ত বিজয়ের চাচা সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি পরিবারের পক্ষে সমাধানের লক্ষে মেয়ের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। তবে ছেলে মেয়ের বয়স কম হওয়ায় বিবাহ বন্ধনে দেয়ার সম্ভব হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে বিবাহ দেয়ার লক্ষে দেড়লক্ষ টাকার একটি সমাধান চেয়েছিলাম। মেয়ের পিতা বিবাহ ছাড়া অর্থ নিয়ে সমাধান হবে না।
যুবতীর চাচা আবু তালেবের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত দুইদিন হয়ে গেল কোন সমাধান হচ্ছে না। বিজয়ের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় এ সমাধানে এগিয়ে আসছে না। থানায় অভিযোগের চেষ্টা করলে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও অর্থের লোভ দেখিয়ে বিজয়কে নিয়ে যাবে। এমতাবস্থায় হঠাৎ করে পুলিশ এসে বিজয়কে থানায় নিয়ে যায়।
রৌমারী থানা অফিসার ইনচার্জ রূপ কুমার সরকারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, ছেলের অভিভাবক, তাদের ছেলেকে উদ্ধার বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে। তাই ছেলেকে আমরা উদ্ধার করে থানায় এনেছি। মেয়েদের পক্ষে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments