শেরপুর সংবাদদাতা: মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসানের ম্যুরাল ‘স্মৃতিতে নাজমুল’ এর উদ্বোধন করা হয়েছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার র রাঙ্গামাটি-খাটুয়ামারি গ্রামে।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ঐতিহাসিক কাঁটাখালী সেতুর পাশে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন শেরপুর জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার। আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ। এতে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম হিরো, শেরপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান আকন্দ, ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম।
শহীদ নাজমুল আহসান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বরুয়াজানী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪৯ সালের ২০ জানুয়ারী জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম সেকান্দর আলী তালুকদার ছিলেন পেশায় শিক্ষক, মা নুরজাহান বেগম তালুকদার ছিলেন গৃহীনি। বাবা মা’র ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম।
১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের ৫ম বর্ষের ছাত্র থাকাবস্থায় দেশের স্বাধীনতার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে তিনি ভারতের তুরার রংনাবাক অরণ্যে এক মাসের গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন। তিনি ১১ নং সেক্টরের অধীনে ১ নং কোম্পানীর ১৩৯ জন প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধার দল নিয়ে মাচাংপানিতে ক্যাম্প স্থাপন করেন। নাজমুলের কমাান্ডে থাকা দলটি নাজমুল কোম্পানি নামে পরিচিতি পায়। পরে কয়েকটি সফল অপারেশন করে তিনি মিত্রবাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি নালিতাবাড়ীকে পাকহানাদার মুক্ত করতে গিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলার কাটাখালি এলাকার রাঙ্গামাটিতে পাহানাদাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ সরকার তাকে স্বাধীনতা পদকে (মরোনত্তর) ভূষিত করেন। শহীদ নাজমূল আহসানের নামে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অত্যাধুনিক ছাত্রাবাস,বৃত্তি ও নালিতাবাড়ীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ রয়েছে।