Sunday, June 11, 2023
Homeজাতীয়শান্তির সোপান গড়ার ক্ষেত্রে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই

শান্তির সোপান গড়ার ক্ষেত্রে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংঘাতের বিপরীতে শান্তির সোপান গড়ার ক্ষেত্রে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার কোনো বিকল্প নেই। শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
 
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী-২০২২’। এ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। 

তিনি বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি একমাসব্যাপী ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০২২’ আয়োজন করছে জেনে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। বিশ্বের দীর্ঘকালব্যাপী চলমান প্রদর্শনীগুলোর মধ্যে অন্যতম এই আয়োজনে ১১৩টি দেশের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি সব শিল্পী, লেখক, কিউরেটর এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পেশাদার কর্মীদের আন্তরিক অভিবাদন ও ধন্যবাদ জানান। 

তিনি বলেন, শিল্পের দিগন্ত ক্রমপ্রসারমান। গত এক দশকেরও বেশি সময়জুড়ে দ্বিবার্ষিক এশীয় প্রদর্শনী বৈশ্বিক মাত্রা পেয়েছে, এতে সারা বিশ্বের গুণী শিল্পীদের অংশগ্রহণের সুযোগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে এই প্রদর্শনী আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শিল্পী এবং তাদের বৈচিত্র্যময় শিল্পভাষার সঙ্গে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির টেকসই সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্র তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান পৃথিবীর ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ-বিবাদ-সংঘাত নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতির পিতার মহান আদর্শ এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্মিলনে বাংলাদেশ যুদ্ধের প্রতি সমর্থন পরিহার করে বিশ্বশান্তির প্রচার ও প্রসারে জাতিসংঘসহ নানা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত সংবিধানে স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম এবং শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উল্লেখ করেছেন, যা হাজার বছরের শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে একটি স্বতন্ত্র সত্তায় বিকশিত হয়েছে। তিনি আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখতে ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন, ১৯৭৪’ প্রণয়ন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। জাতির পিতার সন্তান হিসেবে আমরা সকল ভাই-বোন শিল্প- সংস্কৃতির কোন না কোন শাখায় প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং চর্চা করার সুযোগ পেয়েছি।’ আমার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের শিল্প-প্রতিভা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

শেখ হাসিনা বলেন, শেখ কামাল ছিলেন সংস্কৃতি জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি অভিনয় করতেন, গান গাইতেন এবং সেতার বাজাতেন। তিনি আন্তঃকলেজ সেতার প্রতিযোগিতায় পুরো পাকিস্তানে রানার্স-আপ এবং আন্তঃকলেজ সংগীত প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। দেশ স্বাধীনের আগেই তিনি ‘মৃদঙ্গ’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংগীত ক্ষেত্রে তিনি ‘ট্যালেন্ট শো’ প্রবর্তন করেছিলেন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নাট্য প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদ থেকে ১৯৭২ সালের এপ্রিলে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংস্কৃতি বিনিময় মেলায় অংশগ্রহণ করে সেখানে তিনি শহিদ মুনীর চৌধুরী অনূদিত জর্জ বার্নাড শ-এর লেখা ‘কেউ কিছু বলতে পারে না’ নাটকের মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। 

দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি শিল্পকলার অঙ্গনে সৃষ্টিশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশে এই প্রদর্শনীটি মাইলফলক অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র : বাসস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments