আ.জা. ডেক্স:
শিগগিরই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেশে প্রথম করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মাধ্যমে। কিন্তু মাঝে টিকা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় ডোজের জন্য অনেকেই অপেক্ষায় রয়েছেন। আমরা ইতোমধ্যেই জাপান সরকারের কাছ থেকে কিছু পরিমাণ টিকা পেয়েছি এবং খুব দ্রুত দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষমাণদের টিকা দেওয়া শুরু করবো। ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা আশাবাদী সরকারের বিভিন্ন বহুমুখী পদক্ষেপের কারণে আরও বেশি সংখ্যায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়ে যাবো এবং অবশিষ্ট যারা আছেন তাদের প্রত্যেককেই সে টিকা দিতে সক্ষম হবো।
দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড দিয়ে এ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলেও ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় পরে এ টিকার সংকট হয় দেশে। সেই থেকে এ পর্যন্ত এই টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় রয়েছেন সাড়ে ১৪ লাখ মানুষ। এখানে উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় জাপান সরকারের উপহার দেওয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা দেশে আসে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো এই টিকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামী ১ মাসের মধ্যে আরও প্রায় ২৮ লাখ টিকা জাপান থেকে বাংলাদেশে আসবে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিৎসু মোতেগি ১৫টি দেশের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা কোভ্যাক্সের আওতায় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জাপানের উপহার পাবে এমন দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম। তালিকা অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২৯ লাখ টিকা পাবে বাংলাদেশ। তারই প্রথম চালান দেশে আসে কয়েকদিন আগে।
দেশে ইতোমধ্যে সিনোফার্ম, ফাইজার এবং মডার্নার টিকাও রোল আউট হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, এসব টিকা দিতে শুরু করেছি। সেইসঙ্গে যাদের সুযোগ রয়েছে তাদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তারা যেন অন্যান্যের টিকা নিবন্ধন করতে সহযোগিতা করেন। তবে টিকাকেন্দ্রে যেতে হবে কেন্দ্র থেকে এসএমএস পাওয়ার পর। বিধিনিষেধের প্রতি অনুগত থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য দেশের সব নাগরিকের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে নারী মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি আমাদের নজরে আছে এবং সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। তথ্য-উপাত্তগুলো এক জায়গায় হওয়ার পরে আমরা নিশ্চিত তথ্য দিতে পারবো। বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর চট্টগ্রাম বিভাগে, তারপর খুলনায়। সবচেয়ে কম সংখ্যক রোগী মারা গেছেন সিলেট বিভাগে। জেলার তথ্যে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছেন, চার লাখ ১৯ হাজার ১২৮ জন। এরপরই বন্দর নগরী চট্টগ্রামের অবস্থান। সেখানে ৭৪ হাজার ১৯৩ জন রোগী এবং সবচেয়ে কম রোগী ১৮ হাজার ৮৩৮ জন শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী জেলায়।