আ.জা. ডেক্স:
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্যই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক বিশাল প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্মচারী ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কর্মচারীদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। নানক বলেন, যখন জিয়াউর রহমান শিশুপার্ক তৈরি করে স্মৃতিচিহ্নগুলো মুছে ফেলল তখন কিন্তু পরিবেশবাদী বা বুদ্ধিজীবীরা সেদিন বিরোধিতা করে করে নাই। তখন চুপ ছিলেন। এখন ইতিহাস সংরক্ষণের প্রকল্পে সরব কেন? এটি দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য বলেন, পাকিস্তানি আমলের রেসকোর্স ময়দান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরে এসে, তার জন্মভ‚মিতে ফিরে এসে সেই উদ্যানকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্যাত করলেন এবং সেখানে বৃক্ষরোপণ করলেন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন সেই স্থলটি এবং শক্তিশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সারেন্ডার যেখানে হয়েছিল সেই জায়গাটি কারা নষ্ট করে দিয়েছিল? বন্দুকের নল দিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান সাহেবই তো সেদিন ওই শিশুপার্ক করার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্নগুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। যখন ওই শিশুপার্ক তৈরি করে স্মৃতিচিহ্নগুলো মুছে ফেলা হলো তখন কিন্তু পরিবেশবাদীদেরকে দেখা গেল না? পরিবেশবাদীরা বা বুদ্ধিজীবীরা কিন্তু সেদিন বিরোধিতা করল না? প্রতিবাদ করল না, এটি দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। নানক বলেন, ‘প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে ইতিহাস তুলে ধরার জন্যই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক বিশাল প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সেই বিশাল প্রকল্পে জলাধার রয়েছে, বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ যে জায়গায়, যে মঞ্চ থেকে দিয়েছিলেন, সেই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, যে জায়গায় সারেন্ডার হয়েছে, সেই সারেন্ডারকৃত স্থানটিকে সংরক্ষণ করা করার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ছোট্ট শিশু ঢুকলে সে তার স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারবে সমগ্র উদ্যানে সেরকম একটি বিশাল প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসায় সবার প্রতি আহবান জানিয়ে নানক বলেন, আসুন, সমস্ত ধনীক শ্রেণির মানুষেরা, অর্থশালী মানুষেরা, মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। আপনার জাকাত দিয়ে দুস্থ-গরিব মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। মানুষ তো মানুষের তরে। মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবদুল জলিল ভুঁইয়া, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দী।