Friday, March 31, 2023
Homeশেরপুরশেরপুরে ভূট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

শেরপুরে ভূট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

শেরপুর সংবাদদাতা : শেরপুরে ভূট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভূট্টা চাষে দ্বিগুণ লাভ পাওয়ায় জেলার নকলা উপজেলার কৃষকরা ধানের আবাদ ছেড়ে ভূট্টা চাষে ঝুঁকছেন। নামমাত্র শ্রমে, সামান্য সার ও অল্প খরচে অধিক লাভ পাওয়ায় শস্য ভান্ডার খ্যাত এ উপজেলার কৃষকরা ভূট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। উপজেলার প্রায় সব বেলে ও বেলে দো-আঁশ মাটির জমিতে এবং বাড়ির পাশের পতিত জমিতেও বিভিন্ন জাতের ভূট্টা চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলনের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত ভালো দাম থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উপজেলার চরাঞ্চলসহ পতিত থাকা বেলে ও বেলে দো-আঁশ মাটির মাঠজুড়ে শুধু ভূট্টার ক্ষেত নজরে পড়ে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নকলা উপজেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু সরকারি প্রণোদনা বৃদ্ধি ও কৃষকের অধিক আগ্রহের কারণে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার উপজেলায় ভূট্টা চাষ হয়েছে ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১০.৪ মেট্রিকটন হারে উপজেলায় ভূট্টার মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন। উপজেলার ভূট্টার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ হাজার ৫০০ কৃষকের মাঝে সরকারি কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রতি কৃষককে একবিঘা জমিতে ভূট্টা চাষ করার জন্য দুই কেজি করে ভূট্টার বীজ, ২০ কেজি করে ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ও ১০ কেজি করে মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার দেয়া হয়েছে।
ভূট্টার পাইকারি ক্রেতা ও মজুদ ব্যবসায়ীরা বলেন, অন্যান্য শস্য কিনে মজুদ করলে লোকসানের সম্ভাবনা থাকে, এমনকি পোকার আক্রমণ হলে নিশ্চিত লোকসান গুণতে হয়। কিন্তু ভূট্টাতে তাদের আজপর্যন্ত লোকসান গুণতে হয়নি। তাই দিন দিন ভূট্টার চাহিদা বাড়ছে। ফলে নকলায় ভূট্টা চাষির সংখ্যা ও পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে বলে তারা জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ ফজলুল হক মনি জানান, উপজেলায় এবছর পাইওনিয়ার, এনকে-৪০, সুপার সাইন ও প্যাসিফিক জাতের ভূট্টা চাষ বেশি করা হয়েছে। এরমধ্যে, রাজস্ব খাতের আওতায় ২০ টি প্রদর্শনী প্লট ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় আরো ২টি প্রদর্শনী প্লটে ভূট্টা চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল ওয়াদুদ জানান, উপজেলার চন্দ্রকোনা, পাঠাকাটা, টালকী, বানেশ্বরদী, উরফা, গনপদ্দী, নকলা, গৌড়দ্বার, চরঅষ্টধর ইউনিয়নসহ উপজেলার সর্বত্রই ভূট্টার চাষ হলেও চন্দ্রকোনা, পাঠাকাটা, চরঅষ্টধর, উরফা, গনপদ্দী ও বানেশ্বরদী ইউনিয়নে এ বছর বেশি চাষ করা হয়েছে। ভূট্টা চাষের উপযোগী সব জমিকে ভূট্টা আবাদের আওতায় এনে জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা ও কৃষিপণ্য উৎপাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভূট্টা চাষ করতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের দেওয়া হয়েছে কৃষি প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণ। প্রতিটি বাড়ির পাশের পতিত জমিতে ভূট্টাচাষ করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। এতে কৃষক হবেন স্বাবলম্বী, সমৃদ্ধ হবে এদেশের কৃষি অর্থনীতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments