Tuesday, March 21, 2023
Homeরাজনীতিসঠিক সময়ে নির্বাচন চায় ১৪ দল

সঠিক সময়ে নির্বাচন চায় ১৪ দল

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সঠিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন ১৪ দলের শরীক জোটের নেতাকর্মীরা। 

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহান বিজয়  ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় এই দাবি করেন তারা। 

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাকর্মীরা বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারও মাঠে নেমেছে। তারা শেখ হাসিনার সরকারকে পতন করে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এদেরকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে ১৪ দল ও আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারা। 

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপির গাত্রদাহ নিবারণ করার জন্য আজকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, ১৪ দল থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সবাই সজাগ ও সচেতন। তারা বলেছিল ১০ তারিখ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হবে, খালেদা জিয়া দেশ শাসন করবে। তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন তো দুরের কথা, আজকে তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, তারা বলছেন তাদের নাকি ১০ তারিখে বিজয় হয়েছে। অর্থাৎ তারা সরকারের সঙ্গে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মুচলেকা দিয়ে গোলাপবাগে সভা করেছে, এটাই নাকি তাদের জন্য বিজয়। এই বিজয় নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। আমরাও চাই তারা সন্তুষ্ট থেকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখুক।
 
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা স্বাধীনতা বিরোধী তাদের রাজনীতি করার অনুমতি আমরা দিতে পারি না। তারা বিজয়ের মাসে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে বিশৃঙ্খলা করার পায়তারা করার চেষ্টা করছে। আবার ডিসেম্বর মাসে তারা ১০ দফা দাবি দিয়েছে। বিএনপি হলো ভুয়া, তাদের দিয়ে কোনো কাজ হবে না। কোনো ষড়যন্ত্র করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা মুক্তিযুদ্ধের মূল্য নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। বিশ্বের বুকে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটা মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং ২০৪১ সালের উন্নত দেশে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন, তখনি বিএনপি-জামায়াত আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে বিদেশি শক্তি জড়িত ছিল, সেই একই অপশক্তি বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে এখন ষড়যন্ত্র করছে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।  বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের বিতাড়িত করতে হবে।

জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, যারা বলেছেন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এদেশে নির্বাচন না হলে আপনারা শান্তিতে থাকতে পারবেন না। কারণ কাদের হাতে ক্ষমতা চলে যাবে সেটা বুঝতে হবে। আগামী দিনে নতুন বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য সব নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। 

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ষড়যন্ত্র করতে পারবে না। তারা যদি দেশের মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র করে তাহলে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করতে স্বাধীনতা বিরোধীদের মাঠে নামিয়েছে বিএনপি। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে আয়োজন আহ্বান জানান তিনি।

জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু বিএনপি-জামায়াত তা বাধাগ্রস্ত করছে। গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশ যে সংবিধানের আলোয় এগিয়ে যাচ্ছে তা ধ্বংস করে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি। বাংলাদেশে কোনো পাকিস্তানি প্রেতাত্মার জায়গা হবে না। ১৪ দলের সব নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপি-জামায়াতকে পরাজিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে কোনো আপস হবে না।

সাম্যবাদীর দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে রাজনীতি করেননি, তিনি অর্থনৈতিক অধিকার নিয়েও রাজনীতি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নেতৃত্বে না থাকলে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।

তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা আর তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা দিয়েছেন সোনার বাংলা। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ দুইভাগ বিভক্ত, একটা পক্ষ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, আরেকটা হলো স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি। বিএনপি-জামায়াতকে অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে আর ছাড় দেওয়া হবে না। আগামী নির্বাচন হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষার করার নির্বাচন। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী করার আহ্বান জানান তিনি। 

গণতন্ত্র পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই এখন আবার দেশের মধ্যে ষড়যন্ত্র করেছে। বাংলাদেশের মানুষ মাথানত করতে জানে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতি যারা বাধাগ্রস্ত করবে, তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।

গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার  বলেন, পাকিস্তানিরা তাদের পরাজিত নিশ্চিত জেনে ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা এখনো ষড়যন্ত্র করতে চায়, এই বিরোধী শক্তিকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করতে হবে।  

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি বিএনপির নেতৃত্বে মাঠে নেমেছে। বিএনপি যতবার ষড়যন্ত্র করতে মাঠে নামবে ততবার তারা পরাজিত হবে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সব প্রগতিশীল ঐক্যবদ্ধ। যেভাবে কুখ্যাত রাজাকার, আল বদর ও আল শামসদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করেছে, যারা জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে এবং যারা সব সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যারা বাংলার জনগণের এগিয়ে যাওয়ার পথকে গতিরোধ করতে চায়, সেসব কুলাঙ্গারদের বাংলার মাটি থেকে চিরতরে নির্মূল করব—এটাই আজকের শপথ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments