লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফাহিমা আক্তার তিশা (১৩) নামে এক ছাত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বাড়িতে বললে তাকে ফের মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিশা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে কয়েকজন কিশোর প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করত বলে জানিয়েছেন তার ফুফাতো বোন ও দাদি।
ফাহিমা আক্তার তিশা রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের লাল মিয়া পাটওয়ারী বাড়ির সৌদি আরব ফেরত ফরহাদ হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
তিশা ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিশা স্কাউটের সদস্য। প্রতি বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে স্কাউটের প্রোগ্রাম থাকে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একা বাড়ি ফেরার পথে তিনটি স্থানে মুখোশ পরা কয়েকটি ছেলে তিশাকে ঘেরাও করে। এর মধ্যে চৌধুরী বাজারের পাশে রাস্তার ওপর মুখোশ পরিহিতরা তাকে ধরে জোর করে কয়েকটি ওষুধ খাইয়ে দেয়। একপর্যায়ে তাকে বিদ্যুতের তার ও ইট দিয়ে পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে মুখোশধারী একজনকে কামড়ে সে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায়। এরপর সে প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় থেকে ফেরার ক্লান্তি ভেবে পরিবারের লোকজন তার অসুস্থতাকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফাহিমা আক্তার তিশা জানান, কালো কাপড়ে ছেলেগুলোর মুখ ঢাকা ছিল। এজন্য সে কাউকে চিনতে পারেনি। তারা প্রথমে জোরপূর্বক তাকে ওষুধ খাইয়ে দেয়। পরে তারা বিদ্যুতের তার ও ইট দিয়ে আঘাত করে। বাড়িতে কাউকে বললে হত্যার হুমকি দেয় তারা।
তিশার ফুফাতো বোন তামান্না আক্তার বলেন, তিশাকে কিছু ছেলে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি তিশা আমাদের জানায়। পরে মামাকে নিয়ে ওই ছেলেদের নিষেধ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিশার পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিশার দাদি খোদেজা বেগম বলেন, প্রথমে মনে করেছিলাম স্কুল থেকে ফিরে ক্লান্ত হয়ে গেছে। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিশা বিস্তারিত ঘটনা জানায়।
বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি সকালে জানতে পেরেছি। তবে বিস্তারিত জানা নেই। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে তিশাকে উত্ত্যক্তের বিষয়টিও কেউ কখনো আমাকে জানায়নি। প্রতি বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে স্কাউটের কার্যক্রম চলে। তিশাও স্কাউটের সঙ্গে জড়িত।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ কে আজাদ বলেন, আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি।
রায়পুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাদের জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।