Sunday, June 11, 2023
Homeঅর্থনীতিস্বাধীন বাংলাদেশ ব্যাংক দেখতে চান গভর্নর

স্বাধীন বাংলাদেশ ব্যাংক দেখতে চান গভর্নর

নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে পেশাদার, বিচক্ষণ ও সর্বোচ্চ স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দেখতে চান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

রোববার (২১ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সদ্য বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর বলেন, গভর্নর হিসেবে আমার দায়িত্ব চার বছর। এরপর আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে যেমন দেখতে চাই তা হল- এটি একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান হবে। এখানে ইন্টেলেকচুয়াল বা মেধাবী বিচক্ষণ কর্মকর্তাদের মিলনমেলা থাকবে এবং এপেক্স রেগুলেটরি বডি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।

অনেক সময় কাজের প্রয়োজনে সাবেক গভর্নরদের পরামর্শ নিতে হয়। সেজন্য ফরাসউদ্দিন স্যারকে সবসময় কাছে পেয়েছি। তবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে সব পরামর্শ বাস্তবায়ন করা যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পরপরই আমি কিছু কাজ গুরুত্ব সহকারে হাতে নিয়েছি। এগুলোর মধ্যে কর্মকর্তাদের বাসস্থান। অর্থাৎ ব্যাংক কলোনিগুলোর মান উন্নয়ন। পাশাপাশি কর্মের পরিবেশ ভালো করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যতগুলো অফিস রয়েছে, সেগুলোর মান উন্নয়নের কাজ শুরু করেছি। আমি বিশ্বাস করি, কর্মের পরিবেশ ভালো থাকলে ৪০ শতাংশেরও বেশি প্রোডাক্টিভিটি বেড়ে যায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মো. ফরাস উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার অস্তিত্বের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক মিশে আছে। আমি এটা ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না। যারা এখানে কাজ করেন তারা শুধু চাকরিই করেন না, এটা তাদের পরিবার। আমি অবসরে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত অনেক পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। অনেক সময় গভর্নরদের হাত-পা বাঁধা থাকে। তাই চাইলেও সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেন না।

দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, পাঁচ থেকে আট শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সীমাবদ্ধ থাকলে তাকে মডারেট মূল্যস্ফীতি বলা হয়। ইদানীং আমাদের দেশে যত ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার অন্যতম কারণ বহির্বিশ্বের অস্থিরতা। এ সমস্যাও খুব ভালোভাবেই মোকাবেলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভবিষ্যতেও এরকম ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে ঋণ খেলাপিদের পরিচালক বানানো হয় না। আমি দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় সরকার একবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি ছিলেন ঋণ খেলাপি। তাকে নিযুক্ত করতে সরাসরি আপত্তি জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সুতরাং এখনো পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ সুশাসন ধরে রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও এর ধারা যাতে অব্যাহত থাকে সেই প্রত্যাশা করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, এখানে আমরা যারা কাজ করি সবাই একটি পরিবার। সবাই আমাদের আপনজন। অবসরে গেলেও তাদের সঙ্গে আমাদের আত্মার সম্পর্ক বিদ্যমান। আপনাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সবাইকে নিয়েই আমরা আগামীতে এগিয়ে যেতে চাই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পার্শ্ববর্তী ইসলামী ব্যাংকের জমি কিনতে পারাকে সফলতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকদিন থেকেই আমরা চাচ্ছিলাম জমিটা কিনতে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে পারিনি। নতুন গভর্নর জয়েন করার দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন হয়েছে। সেজন্য গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে ধন্যবাদ জানান আহমেদ জামাল।

সাবেক ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা বলেন, নিজের জায়গা থেকে সঠিকভাবে কাজ করলে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা যায়। উপরের নির্দেশনার দিকে না তাকিয়ে থেকে আপনারা নিজেদের জায়গা থেকে সঠিকভাবে কাজ করুন। অতিরিক্ত পরিচালক অবস্থা থেকেই বিভিন্ন কাজের বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments