অপরিচিতদের ডেকে এনে নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণ করানোর অভিযোগে ফ্রান্সে এক ব্যক্তির বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ ১০ বছর এমন হীন কাজ করেছেন তিনি।
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, অনলাইনের মাধ্যমে ধর্ষণ করতে আসা ৫০ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও বিচার চলবে। স্ত্রীকে ধর্ষণ করানো ওই ব্যক্তি ৭১ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ।
পুলিশ জানিয়েছে, সবমিলিয়ে ওই নারীকে ৭২ জন ব্যক্তি ৯২ বার ধর্ষণ করেছেন। এরমধ্যে ৫১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের বয়স ২৬ থেকে ৭৪ বছর।
ধর্ষণের শিকার নারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেলকে এমন শক্তিশালী ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে যে— তিনি জানতেনও না এক দশক ধরে স্বামীর সহায়তায় তার উপর এমন পাশবিকতা চালানো হয়েছে।
রোমহর্ষক এ মামলার বিচারক রজার আরাতা জানিয়েছেন এ মামলা হবে প্রকাশ্যে। কারণ এই নারীই প্রকাশ্যে বিচারের আবেদন জানিয়েছেন।
কীভাবে ধরা পড়ল ভয়াবহ এ ঘটনা
২০২০ সালে ডমিনিক পি নামের ওই স্বামীর বিরুদ্ধে প্রথম তদন্ত শুরু হয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তাকে একটি শপিং সেন্টারে তিন নারীর স্পর্শকাতর স্থানের ভিডিও করতে দেখে হাতেনাতে ধরেন নিরাপত্তারক্ষী।
এরপর ডমিনিক পি-র বাড়িতে গিয়ে পুলিশ তার কম্পিউটারে তল্লাশি চালায়। ওই কম্পিউটারে তার স্ত্রীর কয়েকশ ভিডিও ও ছবি পান তারা। যারমধ্যে বেশিরভাগ অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিল। এছাড়া ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছিল ওই সময় তার স্বাভাবিক জ্ঞান ছিল না। এছাড়া কয়েকটি ধর্ষণের ছবিও ছিল।
এমনকি তদন্তকারীরা একটি ওয়েবসাইটের সন্ধানও পান। যেখান থেকে তিনি অপরিচিতদের ডেকে এনে নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণ করান।
ডমিনিক পি স্বীকার করেছেন তিনি তার স্ত্রীকে শক্তিশালী ওষুধ দিয়েছিলেন। যেগুলো খেয়ে তার স্ত্রীর চেতনা চলে যেত।
স্ত্রীর সঙ্গে এমন হীন কাজ ২০১১ সালে শুরু করেন তিনি। যা ২০২০ সাল পর্যন্ত চলেছে। ডমিনিক নিজে এসব ধর্ষণকাণ্ডে অংশ নিতেন, ছবি-ভিডিও ধারণ করতেন।
ধর্ষণকারীদের মধ্যে রয়েছে ফোর্কলিফটের চালক, ফায়ার ব্রিগেডের এক কর্মকর্তা, একটি কোম্পানির বস এবং একজন সাংবাদিক। এছাড়া ধর্ষণে অংশ নিয়েছেন অবিবাহিত, বিবাহিত, বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিরা। তাদের বেশিরভাগই ওই নারীকে একবার ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু কেউ কেউ ছয়বারেরও বেশিবার ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন।
এদিকে ডমিনিকের বিরুদ্ধেও ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ ছিল। এখন এগুলো আবার নতুন করে সামনে চলে এসেছে।