ইসলামপুর সংবাদদাতা ; জামালপুর ইসলামপুরে বিভিন্ন বাজারে সবজি চরম অস্থিরতা বিরাজ করেছে। বিভিন্ন সবজি কিনতে ক্রেতারা প্রতি নিয়তই হিমশিম খাচ্ছে। একসময়ে এ অঞ্চলের মানুষ শহরের চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে হর হামেশায় সব ধরনের সবজি ক্রয় করতে পারতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কারণে ছন্দপতন ঘটেছে। এখন শহর আর গ্রামের হাট-বাজারে সব ধরনের সবজির দাম প্রায় একই। গত কয়েক দিনে টানা বর্ষণে শহর ও চরাঞ্চলের হাট-বাজারে সব ধরনের সবজির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এতে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে ইসলামপুর বাজার,ধর্মকুড়া বাজার,গুঠাইল বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাজার সহ বিভিন্ন হাট বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ছাড়া সব সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ২শত টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ এখন ৩ শত ৫০ টাকা,বেগুন ১শত টাকা,করলা ৮০টাকা, মুখীকচু ৬৫ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৬০ টাকা, ঝিংগা ৭০ টাকা, ৪০ টাকা কেজির মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা ৫০ টাকা কেজির বরবটি ৮০ টাকা, ৪০ টাকা কেজি কদর ৭০ টাকা ৫০ টাকা কেজির পটল ৮০ টাকা ৫০ টাকা পিচের জাতি লাউ ১শত-১শত ২০ টাকা, ১০ টাকা লাল- মূলা শাক ২০ টাকা, সবচেয়ে আকাশচুম্বী দাম ধনেপাতা । এভাবে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ায় প্রতি নিয়তই হিমশিত খাচ্ছে খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষ।
সেই সঙ্গে বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। মুরগির খামারি সুবাহান মিয়া বলেন, কাঁচা পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে মুরগির খামারি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ইসলামপুর বাজারে সবজি কিনতে আসা পৌর এলাকার অটোভ্যান চালক কুদ্দুস আলী বলেন, সারা দিনে অটোভ্যান চালিয়ে যা আয় করি তা পরিবারের ছয় সদস্যের সবজি কিনতে গেলে পকেট টাকা থাকেনা। এ অবস্থা শুধু অটোভ্যানচালক কুদ্দুস আলী মন্ডলের নয় এলাকার নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের একই অবস্থা বলে জানান বাজার করতে আসা পরিবার পরিকল্পনার মাঠকর্মী বিউটি আক্তার। তিনিও সবজির বর্তমান দর অতিরঞ্জিত বলে মনে করেন। ‘যা বেতন পাই তা দিয়ে সবজি কেনা ওষুধ, বিদ্যুৎ বিল, ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ দিয়ে অবশিষ্ঠ কিছু থাকেনা।’
গুঠাইল বাজারে সবজি কিনতে আসা চরমন্নিয়া এলাকার কৃষক সোহেল মিয়া জানান, ‘কয়েকদিন আগেও প্রায় সব ধরনের সবজির দাম মোটামুটি সহনীয় ছিল। কিন্তু শীতের সবজির ভরা মৌসুমে এখন আবারও দাম চড়া। দামের ঠেলায় আমরা সাধারণ মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছি।’
কাঁচা সবজি বিক্রেতা মফিজুল ইসলাম জানান, ইসলামপুর বাজারে বেশির ভাগ তরকারি গোয়ালেরচর, চরপুটিমারি, মহলগিরী, হারিয়াবাড়ি, চরদাদনা এলাকার পাইকারি দরের হাট-বাজার থেকে আসে। আর সে সব বাজারেও পাইকারি দরের তরকারির দাম হঠাৎ করেই কেজিতে গড়ে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ কারণে খুচরা বাজারেও দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে এটাই দ্বাভাবিক।
ধর্মকুড়া এলাকার সবজি বিক্রেতা জালাল হোসেন জানান, নাপিতেরচর, ঝগড়ারচর, বকশিগঞ্জ এলাকা থেকে ইসলামপুর এসে পাইকারি সবজি ক্রেতারা সবজি কেনেন। আর এসব মোকামেই সবজির দাম চড়া। তাই সবজি ব্যবসায়ীরা চড়া দামে কিনে চড়া দামেই বিক্রি করবেন এটাই স্বাভাবিক।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোর মনিটরিং করা হচ্ছে। আশারাখি দ্রুত সময়ের মধ্য নিয়ন্ত্রনে আসবে।