জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণকারী আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। একইসঙ্গে অবিলম্বে ছবি এবং পরিচয় সংযুক্ত করে আওয়ামী অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে দেশব্যাপী পোস্টারিং করার দাবিও জানান তিনি।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) এনডিএম এর ঢাকা মহানগর কার্যালয়ে দলটির ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ববি হাজ্জাজ বলেন, গণমাধ্যমে শতাধিক অস্ত্রধারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ছবি বেড়িয়েছে। এরা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের সরাসরি নির্দেশে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে। অথচ আওয়ামী অস্ত্রধারীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৯ জন গ্রেপ্তার হওয়া দুঃখজনক। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গত দেড় দশক ধরে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী বাহিনীর যেসব সদস্যরা নির্যাতনের যে স্টিমরোলার চালিয়েছিলো তার বিচার হতে হবে। সাদ্দাম-ইনানসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত যারাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের তালিকা করে ছাত্রত্ব বাতিলসহ আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, সাবের হোসেন চৌধুরীকে রিমান্ড শেষ হবার আগেই জামিনে মুক্তি দিয়ে বর্তমান সরকার শহীদদের রক্তের প্রতি সুবিচার করে নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মনে রাখা উচিত গণহত্যা, লুটপাট, ভোট ডাকাতি এবং জুলুমের পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা, বাস্তবায়নকারী এবং নীরব সমর্থনকারী প্রত্যেকেই অপরাধের ভাগীদার।
শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ববি হাজ্জাজ বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলো। উচ্চশিক্ষায় আমাদের দেশ বৈশ্বিক সূচকে যোজন যোজন দূরত্বে পিছিয়ে আছে। গবেষণাখাতে অপ্রতুল বরাদ্দ আর শিক্ষক প্রশিক্ষণের অভাবের কারণে আমরা একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে পারছি না। বাংলা মাধ্যমের পাঠ্যপুস্তকে বিতর্কিত, ধর্মীয় উসকানিমূলক এবং নিম্নমানের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো মানসম্মত নয়। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।
সাধারণ সভায় ছাত্র আন্দোলন-এনডিএমের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েলের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির মহাসচিব মোমিনুল আমিন, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল ইসলাম, যুব আন্দোলনের সভাপতি আদনান সানি।
ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ ফরিদের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন— যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী চৌধুরী রাকিব, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মাহিদুল ইসলাম জিহাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাহাতুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ।