আটদিনের সফর গড়াচ্ছে আট মাসে, আটকেপড়া নভোচারীরা ফিরবেন যেভাবে

আটদিনের জন্য মহাকাশে গিয়ে আট মাস পর পৃথিবীতে ফিরতে হচ্ছে সুনীতা উইলিয়ামস এবং ব্যারি উইলমোরকে। তারা বোয়িংয়ের স্টারলাইনারে করে মহাকাশে যান। তবে ফিরবেন প্রতিপক্ষ ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের মহাকাশযানে করে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীতে ফিরবেন সুনীতা উইলিয়ামস এবং ব্যারি উইলমোর। শনিবার (২৪ আগস্ট) মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেছেন, নাসা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ক্রিউ ৯-তে (স্পেস এক্সের মহাকাশযান) চেপে বাচ (ব্যারি উইলমোর) এবং সুন্নি (সুনীতা উইলিয়ামস) ফিরবেন। আর ওই স্টারলাইনের (মহাকাশযানটি) কোনও সদস্য ছাড়াই ফিরে আসবে।

অর্থাৎ বোয়িংয়ের স্টারলাইনারে করে চেপে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গেলেও সুনীতাদের স্পেসএক্সের মহাকাশযানে করে পৃথিবীতে ফিরতে হবে। যা বোয়িংয়ের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর হতে চলেছে। গত কয়েক বছরে সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে মার্কিন সংস্থা বোয়িং। আর এবার প্রতিপক্ষ ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের মহাকাশযান করে তাদের অভিযাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে।

অথচ গত জুনে যখন রওনা দেন সুনীতারা, তখন তাদের আটদিন মহাকাশে থাকার কথা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানার পরে স্টারলাইনার মহাকাশে রওনা দিলেও বোয়িংয়ের মহাকাশযানের প্রপালশন সিস্টেমে গোলযোগ ধরা পড়ে। সেই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সুনীতাদের ফিরতি সফর স্থগিত করে দিয়েছিল নাসা। বোয়িং এবং নাসার বিজ্ঞানীদের ধারণা, স্টারলাইনারের প্রপালশন সিস্টেমের যা হাল, তাতে পৃথিবীর দিকে নেমে আসার ক্ষমতা নেই। সেই পরিস্থিতিতে মাস্কদের শরণাপন্ন হতে হয়েছে।

নয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী মাসের শেষের দিকে উড়ে যাবে স্পেসএক্সের ক্রিউ-৯। তাতে চারজন যাওয়ার কথা থাকলেও দুজনকে নিয়ে রওনা দেবে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের চারপাশেই থাকবে। তারপর নির্দিষ্ট সূচি মেনে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীতে ফিরে আসবে। তাতে স্পেসএক্সের দুজন মহাকাশচারী থাকবেন। সঙ্গে থাকবেন সুনীতা এবং উইলমোরও।

আটদিনের জন্য যে মিশনে যান সুনীতারা, সেখানে আট মাস থাকতে হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে সুনীতাদের কি পর্যাপ্ত জোগান আছে? সেই প্রশ্নের জবাবে নাসা আশ্বস্ত করেছে যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পর্যাপ্ত জোগান আছে। আর দুই মহাকাশচারীও নির্দিষ্ট সময়ের থেকে অনেকদিন বেশি মহাকাশে কাটানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। আর তারা অনেক গবেষণাও চালাতে পারবেন।

১০ বছর আগে নিজের স্পেস শাটলকে বসিয়ে দেওয়ার পরে বোয়িং এবং স্পেসএক্সের থেকে নয়া মহাকাশযানের বরাত দিয়েছিল নাসা। যা মহাকাশচারীদের আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারবে। নিয়ে আসতে পারবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে। নাসার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, দুটি মহাকাশযান থাকার পরও একটিতে কোনও সমস্যা হলে অপরটি ‘উদ্ধারে’ নামতে পারবে।