ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, সেখানে আমাদেরকে বিরোধী দল বানানোর জন্য কম চেষ্টা করা হয়নি। আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল, কিন্তু আমরা পরিষ্কার বলেছি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং চরমোনাই মুজাহিদ কমিটি দু-একটা এমপি-মন্ত্রীর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কখনোই লেজুড়ভিত্তিক হয়ে ক্ষমতা চায়নি।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে বরগুনা পৌর শহরের টাউনহল মাঠে আয়োজিত বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে। আমাদের দেশের মেধাবী ছেলেগুলো যখন কোটা সংস্কারের ন্যায্য একটি দাবি করেছিল তখন কোনো দল রাজনৈতিক ব্যানারে তাদের পাশে দাঁড়ানোর সাহস পায়নি। কিন্তু ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, আমরা সবকিছুতে এককথায় ভয়কে গুরুত্ব না দিয়ে, নিজের জীবন বিসর্জন হবে এটাকে গুরুত্ব না দিয়ে ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের প্রতিবাদে রাজপথে রাজনৈতিক ব্যানার নিয়ে হকের পথে আওয়াজ তুলেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানুষের জানমাল, ইজ্জত ও মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য দায়িত্ব পালন করেছি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা দেখেছি বারবার ওরা (আওয়ামী লীগ) আমাদেরকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় গিয়ে মদের লাইসেন্স পাস করেছে, বেশ্যাবৃত্তির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় আমাদেরকে ব্যবহার করে ওরা ক্ষমতায় থাকার পর এ দেশকে চুরির দিক দিয়ে ফার্স্ট বানিয়েছে। আমরা দেখেছি আমাদেরকে ব্যবহার করে ওরা পাশের রাষ্ট্র ভারতের দালালি করে। আমাদের শিক্ষা সিলেবাস থেকে ইসলামকে একেবারে উঠিয়ে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। মুসলমানের ইতিহাসকে বিকৃত করে মিথ্যা ইতিহাসের মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামের প্রতি ঘৃণা জন্মানোর জন্য নীলনকশা তৈরি করেছিল। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি করেছিল। আমরা ভালো করে পর্যালোচনা করে দেখেছি একটি চুক্তিও বাংলাদেশের জন্য কিঞ্চিৎ পরিমাণ উপকার হয়নি। সব ভারতের স্বার্থ।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, তিনি তো বলেছেনই আমি ভারতকে যা দিয়েছি এটা মনে রাখতে হবে, ভুলতে পারবে না। আমাদের দেশের মাটিতে বসে বিদেশের দালালি করা আর এ দালালদের (আওয়ামী লীগ) আমরা সহযোগী হব, সহযোগিতা করব এটা হতে পারে না।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, তারা চেয়েছে একটি ইস্যু তৈরি করবে, হিন্দুদের ইস্যু, হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হবে। কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের দায়িত্বে হিন্দুদের জানমাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তার জন্য পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সম্পর্কে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত একজন এমপিও আমাদের সংসদে যায়নি। এক ডজন এমপি সংসদে যাওয়া আমাদের জন্য ওয়ান-টু’র ব্যাপার ছিল। কিন্তু ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কখনোই লেজুড়ভিত্তিক হয়ে ক্ষমতা চায়নি।