ইউরোপমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বাধা দেবে না বেলারুশ

সংকটপূর্ণ অঞ্চল থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বেলারুশের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজেন্ডার লুকাশেঙ্কো। সোমবার বেলারুশের মিত্র দেশ রাশিয়ার একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।

লুকাশেঙ্কো বলেন, ‌‌‘‘আপনি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমার গলায় ফাঁস লাগিয়েছেন এবং তারপরে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রবাহ থেকে ইইউকে রক্ষা করার দাবি জানাচ্ছেন? তা হবে না।’’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার মিত্র লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে ২০২১ সাল থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনিয়মিত অভিবাসীদের ইইউতে পাঠানোর জন্য দায়ী করে আসছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে পোল্যান্ড এ বিষয়ে বার বার অভিযোগ করেছে। বলা হচ্ছে, অনিয়মিত অভিবাসীদের সুবিধা দিতে তাদের ভিসা ইস্যু করার পাশাপাশি পরিবহন সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে।

ইনফোমাইগ্রেন্টসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলারুশের সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ডের সীমান্তে ঢোকার চেষ্টা করেন অনিয়মিত অভিবাসীরা। অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে বেলারুশের সঙ্গে থাকা সীমান্তে সাড়ে পাঁচ মিটার উঁচু বেড়া আর ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা তৈরি করে সীমান্ত সুরক্ষিত করেছে পোল্যান্ড।

তারপরও প্রায় প্রতিদিনই সীমান্ত পেরিয়ে অনিয়মিত অভিবাসীদের ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা থামছে না। শেষ তিন দিনে অন্তত ২০১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী বেলারুশ সীমান্ত থেকে পোল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন পোলিশ সীমান্তরক্ষীরা।

সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত জার্মান ফেডারেল পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বেলারুশ থেকে তিন হাজার ১১৭ বার অনিয়মিতভাবে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার প্রচেষ্টা রেকর্ড করেছেন তারা। গত বছর এই রুট দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এসেছেন ১১ হাজার ৯৩২ জন অনিয়মিত অভিবাসী।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্তে গত তিন বছরে বেড়েছে অভিবাসী মৃত্যুর সংখ্যা। ২০২১ সাল থেকে বেলারুশের ‘কর্তৃত্ববাদী’ প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে অভিবাসীদের সীমান্তের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

১৮ জুলাই একটি যৌথ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড এবং বেলারুশের অভিবাসন সংস্থা এবং এনজিওগুলো। তাদের মতে, ২০২১ সালের শুরু থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বেলারুশের সাথে থাকা ইইউ দেশগুলোর বিভিন্ন সীমান্ত অন্তত ১১৬ জন অভিবাসীর মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।