ইসলামপুরে প্রথম নারী পিআইও অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত

লিয়াকত হোসাইন লায়ন : যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বেস্টিত ইসলামপুর উপজেলা অধিকাংশই চরাঞ্চল। নদী ভাঙন ও বন্যা কবলিত উপজেলা হওয়ার কারণে উপজেলায় শুধু পুরুষদেরই জনগুরুত্ব পূর্ণ এই পদে (পিআইও) দায়িত্ব দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত ১০ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের ত্রাণ প্রশাসন শাখা-১ এর উপসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মোছা. নূর-এ-শেফাকে ইসলামপুর উপজেলায় পিআইও পদে পদায়ন করা হয়। ১৪ আগস্ট অফিসিয়ালি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৭ আগস্ট বিকালে অতিরিক্ত দ¦ায়িত্বে থাকা সরিষাবাড়ী উপজেলার পিআইও শওকত জামিল দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এর ফলে প্রথম বারের মতো একজন নারী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) পায় ইসলামপুরবাসী। গত ১৮ আগস্ট মোছা. নূর-এ-শেফার প্রথম কর্মদিবস হলেও কার্যালয়ে পৌছেন প্রায় তিন ঘণ্টা পর। আবার মাত্র দুই ঘণ্টা ১৫ মিনিট কার্যালয়ে অবস্থান করেই চলে যান ।
প্রথম কার্যদিবসে সময়মত না আসা এবং খুবই অল্প সময় অফিস করে যাওয়ার ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে পিআইও নূর-এ-শেফার পরিবর্তে তার স্বামী অফিস করছেন। বিষয়টি নিয়ে গতকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে তদন্ত করেন জামালপুর জেলার নবাগত ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ হেল কাফি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল ৯টায় অন্যান্য কর্মচারী অফিসে উপস্থিত হলেও পিআইও মোছা. নূর-এ-শেফাকে তাঁর কার্যালয়ে দেখা যায়নি। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। দুপুর ২টায় কার্যালয় ছেড়ে চলে যান। এরপর তিনি আর কার্যালয়ে ফিরেননি বলে জানা যায় ।
সরকারি বিধি মতে, ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হয়। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে কর্মঘণ্টা পরিবর্তিত হতে পারে। তবে বিশেষ কোনো কাজ ছাড়া কর্মঘণ্টা শুরু থেকে অন্তত ৪০ মিনিট কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কার্যালয়ে অবস্থান করা বাধ্যতামূলক।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে কাজে আসা কয়েকজন অভিযোগ করেন, যোগদানের পর টানা ১০ দিন অফিসে আসেননি পিআইও। এতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে নূর-এ-শেফা যোগদানের পর পরই তার দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তার সামনে থেকে আগত সেবা গ্রহীতাদের বসার আসন সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা জন প্রতিনিধিদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
সাপধরী ইউনিয়নের ওবাদুল হক বলেন, একটি প্রকল্পের তথ্য জানতে পিআইওর কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। পিআইও কার্যালয়ে না থাকায় প্রকল্পের তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে নবাগত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোছা. নূর-এ-শেফা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে বিষয়টি সত্য কিনা সেটি তদন্ত সাপেক্ষে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে । জানা যায়, এর আগে মোছা. নূর-এ-শেফা রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার পিআইওর দায়িত্ব পালন করেছেন।