ইসলামপুরে সাবেক মেম্বার আব্দুল হাই হত্যাকান্ডের মূল হোতারা কেউ গ্রেপ্তার হয়নি

ইসলামপুর সংবাদাতা : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার শাশারিয়া বাড়ি গ্রামে সাবেক ইউপি মেম্বার হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর দেড়মাস পেরিয়ে গেলেও এলাকায় এখনো স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। ভীত সন্ত্রস্ত এলাকাবাসী মুখ খুলছে না। খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজন মহিলাকে গ্রেফতার করলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে। মূল হোতারা রয়ে গেছে নাগালের বাইরে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে ও থানা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার পাথরসী ইউপি’র শাশারিয়াবাড়ি গ্রামে গত বছরের ২৯ নভেম্বর রাতে সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল হাই সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। হত্যাকান্ড সংঘঠিত হওয়ার রাতে হাই মেম্বার রাত ন’টা পর্যন্ত মলমগঞ্জ বাজারে ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এরপর রাত সাড়ে ন’টার দিকে উত্তর শশারিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই গ্রামের তরুণ ছেলেরা ব্যাডমিন্টন খেলছিল। এ সময়ে তরুণরা হাই মেম্বার কে একা নদীর পাড়ের দিকে যেতে দেখেছে এবং হত্যাকারীদের বাড়িও নদীর পাড়ে বলে নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে। হাই হত্যাকাণ্ড প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।
তবে ওই গ্রামের ৪/৫ জন হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পলাতক রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে ওই রাতেই কে বা কারা সালিশ করার কথা বলে হয়তো ডেকে নিয়ে যায়। এবং পরদিন ৩০/৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শাপধরি ইউনিয়নের প্রজাপতি নামক চরে যমুনার নদীর তীরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হাই মেম্বারের লাশ পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, মেম্বার থাকাকালীন লেনদেনের কারণ ও এলাকার দুর্র্ধষ ডাকাতদের ধরে মারধর করে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার কারণেও এ হত্যাকান্ড সংঘঠিত হতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।
গত রোববার হত্যা মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলামপুর থানার ওসি মো. সাইফুল্লাহ্ বলেন, একজন সন্দেহ ভাজন মহিলাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে নিহতের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার জোবায়ের হোসেন সুজন ওই মহিলা নির্দোষ এবং সে এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে সুপারিশ করায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, হত্যাকাণ্ডটি বাহাদুরাবাদ নৌ থানার এরিয়ার মধ্যে সংঘটিত হওয়ায় মামলার দায়িত্ব নৌ থানার ওপর। তবে নৌ থানার ওসিকে বলেছি, আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ফোর্স এর প্রয়োজন হলে আমি ফোর্স দিয়ে সহযোগিতা করবো।তিনি আরো বলেন, আমি গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে তাদের নাম নৌ থানার ওসিকে জানিয়েছি।এ বিষয়ে বাহাদুরাবাদ ঘাট নৌথানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন,এ মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই এ থানায় নতুন কাজে যোগদান করেই তার মেয়ের বিয়ের জন্য ছুটি নিয়ে গেছেন। আমিও এখানে নতুন তাই মামলাটি’র তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না। যানবাহন ও লোকবলএর অভাবে মামলাটি’র কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবে মামলাটি নিয়ে আমি নিজেই কাজ করছি। আশা করছি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হত্যাকারীদের চিহ্নিত করবোই।