ইসলামপুর ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ

oplus_2

ওসমান হারুনী : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ “খাবারের মান অত্যন্ত খারাপ নিম্নমানের ও পরিমানেও কম” দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গত ১লা মার্চ হতে প্যারাগন কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইসলামপুর উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির রোগীর খাদ্য ও পথ্য সামগ্রী সরবরাহের দায়িত্ব পায়। সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। সে হিসেবে ৫৮ টাকার মধ্যে সকালে পাউরুটি, সিদ্ধ ডিম, কলা ও ২০ গ্রাম চিনি, দুপুরে ও রাতে ১০০ গ্রাম মাছ, ২০০ গ্রাম ভাত, ২০গ্রাম ডাল এবং পরমিাণ মতো সবজি দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন সকালে ভর্তিকৃত রোগীদের একটি ৫টাকা দামের নিম্নমানের পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম ও একটি নিম্নমানের সাগর কলা আবার কখনো এক/ দুই টাকা দামের একটি চিনিচম্পা কলাও দিচ্ছে। এক কেজি ওজনের নিচে নয় এমন মাছের তরকারি দেওয়ার কথা থাকলেও তিন মাছে এক কেজি হয় এমন ছোট ওজনের ৫০ গ্রাম মাছ, ১০০গ্রাম মোটা চালের ভাতের সাথে মশুর ডাল দেওয়া হয়েছে । রাতের খাবার দুপুরের খাবারের মতোই একই খাবার সরবরাহ করা হয় বলে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীরা জানান। সপ্তাহে একদিন দুপুরে ও রাতে দুই বেলা দেওয়া হয় বয়লার(ফার্মের) মুরগি মাংস। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে টেন্ডারের শর্তে উল্লেখ আছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে সপ্তাহে চার দিন মাছ এবং দুই দিন মাংস রোগীদের নিকট সরবরাহের কথা। তবে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সরবরাহ করা হচ্ছে এক কেজি ওজনের কম ছোট মাছের তরকারি এবং মোটা চালের ভাত। পরিমানে এভাবে কম নিম্মমানের খাবার পরিবেশন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সরকারের টাকা লুটপাটের পায়তারা করছেন। বিষয়টি রহস্য জনক কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের যেন দেখার কেউ নেই। গোয়ালেরচর ইউনিয়ন থেকে আসা ভর্তিকৃত রোগীর সাথে রবিবার কথা হলে তিনি জানান,৬দিন ধরে ভর্তি রয়েছেন, ৬দিনে প্রতিদিন সকালে একটি সাগর কলা,একটি ডিম ও একটি পাওরুটি নাস্তা পেয়েছেন, দুপুরের মাছের তরকারি ও ডাল, রাতে একই খাবার। শুধু একদিন দুপুরে ও রাতে বয়লার মুরগী মাংস দিয়ে খাবার পেয়েছেন। মোটা চালের ভাত, পাতলা ডাল আর মাছ-মাংসের তরকারীতে তেমন কোন স্বাদ নেই। একই কথা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের। খাবারের মান ভাল নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে খাবারের মান ভাল না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও, খাবার সরবরাহ দেরিতে হয়। সকাল বিকাল রাতে নিদিষ্ট সময়ে খাবার দেওয়া হয় না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক কর্মচারীরা জানান, আগের ঠিকাদারের খাবারের মান ভালছিল। এখন এক কেজি ওজনের নিচে মাছ কিনে ৫০গ্রাম ওজনের মাছের চাকা দেওয়া হয় রুগীকে । সকালের নাস্তায় চিনি চম্পা অথবা ছোট সাগর কলা,নিম্নমানের কমদামের পাউরুটি দেওয়া হয়। এব্যাপারে হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারী প্রধান সহকারী আব্দুল জলিলের সাথে প্রতিদিনের রুগীদের খাবার সরকারি বরাদ্দ নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, একটা রুগী দৈনিক ১৭৫ টাকার খাবার পাবে। ১৭৫ টাকাকে তিন ভাগ করলে যে টাকা হবে। সেই টাকার মধ্যে সকাল দুপুর ও রাতে খবার পাবে রুগীরা। প্রতিদিনের খাবারের তালিকা এখনো প্রস্তুত করা হয়নি। এই সপ্তাহেই তালিকা তৈরি করা হবে। সৈ তালিকায় তিন কর্মকর্তার স্বাক্ষর করবে। খাবার অনিয়মের বিষয়ে রবিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে ৫০শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এই সরকারি হাসপাতালটিতে রবিবার ভর্তিকৃতরোগীর ৩৮জনের খাবার ও আগের দিন শনিবার ৩৬জনের খাবার দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ড.এএএম আবুতাহের জানান ,খাবারের বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে কথা বলেন,এখন নিউজ না করাই ভাল। এ বিষয়ে খাদ্য সরবরাহকারী প্যরাগন কনস্ট্রাকশনের ঠিকাদার নশরত জাহান মিথুনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি নতুন ঠিকাদার, বাজার আমি করিনা, আমার পার্টনার আছে। রুগীর সেবার জন্য কাজ নিয়েছি,বদদোয়া নয়। ভাল মানের খাবার দেওয়া হবে।