ইসিকে আসন বাতিলের ‘ক্ষমতা’ ফিরিয়ে দিতে আইন দেখার নির্দেশ

নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হলে কেন্দ্র নয়, পুরো আসন বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনারকে ফিরিয়ে দিতে আইনের দিকটা খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বুধবার (৯ জুলাই) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার  এ কথা বলেন। এসময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, গত সরকার আমলে আমরা একটা উপ-নির্বাচনে দেখেছিলাম যে, নির্বাচন কমিশন সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে। পরে ওই পুরো একটা আসনে নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে আইন সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতাকে খর্ব করা হয়েছিল। এখন শুধু নির্দিষ্ট কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারে। নির্বাচন কমিশনের ওই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা, যদি কোনো নির্দিষ্ট আসনে ব্যাপক অনিয়ম হয়, নির্বাচন কমিশন সেই আসনের নির্বাচনকে বাতিল করতে পারে কি না আইনের দিকটা খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বা নির্বাচনে দায়িত্বে যারা পালন করে তাদের তো প্রশিক্ষণ দেওয়া হবেই, ভোটারদের কেউ যাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কারণ অনেক ভোটার রয়েছেন, যারা নতুন ভোটার কখনো ভোট দেননি, তারা কীভাবে ভোট দেবেন এটা যাতে তারা আগে থেকেই জানতে পারেন। ভোটারদের প্রশিক্ষণের বিষয়টাও আজকে আলোচনা হয়েছে।

‘গত তিনটা বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে যেসব পোলিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেছিল, তাদের বাদ দিয়ে যাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায় কি না সেই বিষয়টাও যাতে খতিয়ে দেখা হয়। সব সম্ভব না হলেও যত বেশি সম্ভব তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচনের কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায়, সে বিষয়টা খতিয়ে দেখার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। যেখান থেকে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াটা মনিটরিং করা হবে। সেখানে কোনো অনিয়ম দেখা গেলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারি। আজকে মিটিংয়ের মূল উদ্দেশ্যটা ছিল, নির্বাচন সংক্রান্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং তাদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভোটার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং অন্যান্য যারা কর্মকর্তা নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছেন তাদের প্রত্যেককে নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে। 

‘জনবল নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো অলরেডি প্রক্রিয়াধীন। সেই  প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। তাদের ট্রেনিংয়ের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি কোনো ক্রয়ের বিষয় থাকে তাহলে সে ক্রয়গুলো বিশেষ করে পুলিশের বডিং ক্যামেরা, আলোচনা হয়েছে।’ 

উপ প্রেস সচিব বলেন, পুলিশ ৪৭ হাজার নির্বাচনের কেন্দ্র প্রত্যেকটা কেন্দ্রে যাতে পুলিশ বডি ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারে। সেজন্য বডি ক্যামেরা রিক্রুটমেন্ট খুব দ্রুত সম্পূর্ণ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। এক থানার পুলিশকে অন্য থানা দিয়ে দেখা যেতে পারে কিনা, যাতে তারা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কেউ তাদের দ্বারা প্রভাবিত করতে না পারে, এটাও আজকে আলোচনা হয়েছে। তবে আজকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজকে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন।