ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর আনসার সদস্যদের বিদ্রোহের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ হাজার আনসার সদস্যকে তাদের কর্মক্ষেত্রে সাময়িকভাবে স্থগিত করে রাখা হয়েছে।
আজ (শনিবার) রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তরে শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এ কথা বলেন।
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর আনসারের কিছু উশৃংখল সদস্য সচিবালয়ের সামনে বিদ্রোহ করেন। এর প্রেক্ষিতে ছাত্র-জনতার মধ্যে একটি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে উশৃংখল সদস্যদের মোতায়েন করা নিয়ে কোনো অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমাদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। এই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে আমরা প্রায় ১৩ হাজার ৮০ জন আনসার সদস্যকে সাময়িক স্থগিত করে রেখেছিলাম। তাদের স্থগিত করার পর আমরা তাদের কোনো ডিউটি দেইনি। তবে আমরা এই ১৩ হাজার ৮০ জনকে আরও যাচাই-বাছাই করেছি। আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্টতা বা তেমনভাবে সম্পৃক্ততা ছিল না, এমন ৪ হাজার ৬৬৯ জনকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় এনে কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করেছি।
তিনি বলেন, তবে এখনও ৮ হাজার ৬১১ জন আনসার সদস্যকে সাময়িক স্থগিত করে রাখা হয়েছে। আর আন্দোলনের সময় যারা খুবই আগ্রাসী এবং হিংসাত্মক ভূমিকা পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৪৪৭ জন আনসার সদস্য গ্রেপ্তার রয়েছেন। উশৃংখল আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা আন্দোলন করেছিলেন তারা এখন বুঝতে পেরেছেন এটি খারাপ কাজ ছিল। তাদের যে দাবিগুলো সেগুলো এড্রেস করা হয়েছে। আনসার সদস্যদের রেশন বাড়ানো নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা গেছে মন্ত্রণালয়ে। আমি নিশ্চিত এ বিষয়ে একটি পজেটিভ নির্দেশনা আসবে। যেহেতু এরা চুক্তিভিত্তিক কাজ করে, তাই এদের কোনো পেনশন নেই, তাদের একটা পেনশন সুবিধার দাবি ছিল।
আনসার ডিজি বলেন, দেশের অন্য সব খাতের মতো আনসার বাহিনীতেও সংস্কার চলছে। আগে দেখা গিয়েছিল যে আনসার সদস্যদের কার্যক্রম শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট একটি পরিধির মধ্যে ছিল। আমরা এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া এমনভাবে করব যাতে করে এখানে সকল জেলার প্রতিনিধিত্ব থাকে। আগে দেখা যেত আনসার সদস্যরা তাদের নিজস্ব চাওয়া অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পেতেন। কিন্তু এখন আর এমনটি হবে না। আমাদের নতুন বিধিমালা অনুযায়ী সবাইকে অন্যসব চাকরির মতো যে কোনো জায়গায় গিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আনসার বাহিনীতে এখন আর অনিয়ম কিংবা অনিয়মতান্ত্রিক কোনো কার্যক্রম থাকবে না।