জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, কর শব্দটির ব্যাপারে দীর্ঘকাল ধরে জনমনে যে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে তা দূর করে দেশের উন্নয়নের গর্বিত অংশীদার হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে রাজস্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সবার দায়িত্বশীলতা ও ইতিবাচক মানসিকতা ধারণ করতে হবে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল বিভাগের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান একথা বলেন।
আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নকে সামনে রেখে বিভাগীয় পর্যায়ে এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনার অংশ হিসেবে বরিশাল সার্কিট হাউজের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির ‘কাস্টমস নীতি’ ও ‘আইসিটি’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য মো. মাসুদ সাদিক এবং ‘কর নীতি’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য এ কে এম বদিউল আলম।
এনবিআর চেয়ারম্যান ‘উন্নয়নের জন্য রাজস্ব’ শীর্ষক উপস্থাপনায় সামন্ততান্ত্রিক যুগের শাসন ও রাজস্বব্যবস্থার সঙ্গে আধুনিক রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং রাজস্বব্যবস্থার তুলনামূলক চিত্র, এনবিআরের গৃহীত রাজস্বনীতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কে আলোকপাত করেন। এছাড়া তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্থবছরে বাজেটের আকার, খাতভিত্তিক রাজস্ব আদায়ের শতকরা হার, দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর সহায়তা, ‘করনেট’ বা করজাল সম্প্রসারণে সংস্থাটির গৃহীত উদ্যোগের বিষয়ে কথা বলেন। এ লক্ষ্যে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধনের নানাদিক, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ধারণার বাস্তবায়নসহ এনবিআরের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য, পরিকল্পনা, কর্মকৌশল, আয়কর, শুল্ক এবং মূসক বিভাগের ডিজিটাইজেশন ও চলমান বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের মতো রাজস্ব-সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপরও আলোকপাত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী প্রাসঙ্গিক উপাত্তের মাধ্যমে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের প্রেক্ষাপটে সরকার ও জনসাধারণের আয় বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বরিশালের বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজিত এ সভার উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তরসহ বিভিন্ন পর্বে দেশের মাটিতে আইটি প্রোডাক্ট, থ্রি-হুইলার ও ফোর-হুইলার যানবাহনের মতো উচ্চ মূল্য-সংযোজনধর্মী পণ্য উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বিষয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া মতবিনিময়ে করজাল সম্প্রসারণ ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিক্রেতাদের কাছ থেকে যথানিয়মে ভ্যাট পরিশোধের স্লিপ সংগ্রহ, নানান ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কর রেয়াত, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কিত বিষয়াদি, প্রগতিশীল করব্যবস্থা এবং অতিধনীদের ওপর প্রত্যক্ষ করের আওতাবৃদ্ধি, শিশুদের শিক্ষাক্রমে যথাযথভাবে কর দেওয়া সম্পর্কিত অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির মতো নানা বিষয় আলোচনা করা হয়।