আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা ইলিশের প্রথম চালান ভারতে পৌঁছেছে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই দেশটির পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার হাওড়ার পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশের ‘রূপালি শস্য’।
পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মোট ১০ মেট্রিক টন ইলিশ এসেছে হাওড়ায়। শুক্রবারের মধ্যেই জেলার সমস্ত খুচরা বাজারে মাছ পৌঁছে যাবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, শুক্রবার সকাল থেকে হাওড়ার পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ১৪৫০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে ইলিশের দাম। তবে জোগান এবং চাহিদার উপরে এই দাম ওঠা-নামা করতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ থেকে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে মোট ৪০ মেট্রিক টন ইলিশ গেছে। বৃহস্পতিবারই বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে বাংলাদেশের ইলিশ। শুক্রবার এই স্থলবন্দর হয়ে আরও কিছু পরিমাণ ইলিশ রাজ্যটিতে ঢুকতে পারে।
এদিকে পূজার আগে বাজারে পদ্মার ইলিশ ঢোকায় খুশি বিক্রেতারা। শুক্রবার থেকেই কলকাতার সমস্ত বাজারে ইলিশ পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এই মাছের দাম কতটা মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে থাকবে, তা নিয়ে সংশয়ে মাছ বিক্রেতারা।
হাওড়ার স্থানীয় একটি বাজারে মাছ বিক্রি করা সুকুমার মল্লিক বলেন, “পাইকারি বাজারেই ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১৭০০ টাকা হয়ে যাচ্ছে। খুচরা বাজারে দাম আরও বাড়বে। ফলে কত জন ইলিশ কিনতে আগ্রহী হবেন, বোঝা যাচ্ছে না।”
কলকাতার ‘ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ অবশ্য বলেন, “জোগান বাড়লে পূজার আগে ইলিশের দাম কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে পূজায় মধ্যবিত্তের পাতেও পড়বে ইলিশ।”
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ বলছে, হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে পদ্মার রুপালি শস্য পৌঁছানোর পর শুক্রবার প্রথমদিনই বাজারে ইলিশের চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। ১৪০০-১৬০০ টাকা কেজি দাম পাইকারি বাজারে চলছে ইলিশের বেচাকেনা।
অবশ্য হাওড়ার খুচরা বাজারে ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকায় এই মাছ কিনতে হবে বাঙালিকে। মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আজ বাজারে এসেছে ৪০ মেট্রিক টন মাছ। ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪২০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানি ও আমদানি করতে পারবে দুই দেশ।
কলকাতার মানিকতলা বাজারে আজকে গড়ে ৫০০ কেজি বাংলাদেশি ইলিশ ঢুকেছে। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ১২০০ টাকা কেজি। ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা কেজি। ১ কেজি ২৫০ কেজি ওজনের মাছ ১৮০০ টাকা কেজি। দেড় কেজি ওজনের মাছ ২০০০-২২০০ টাকা কেজি। আপাতত এই দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বেলা বারোটার পরে নতুন দাম নির্ধারিত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাজার কর্তৃপক্ষ।
ইলিশ বিক্রেতা প্রবীর হালদার বলেন, “বিক্রি মোটামুটি ভালো। এখনও পর্যন্ত খান দশেক মাছ বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এতদিন মার্কেটটা খারাপ ছিল আজকে ইলিশ ঢুকে মার্কেটটাকে দাঁড় করিয়েছে। আজ এই মাছ বেচার টাকা দিয়েই বউকে শাড়ি কিনে দেব।”
সংবাদমাধ্যম বলছে, আপাতত যে ইলিশগুলো ভারতে পৌঁছেছে তার ওজন এক কেজির বেশি। আজ থেকেই বাংলাদেশি ইলিশ মিলবে রাজ্যটির বাজারগুলোতে। আর তাতেই হবে ভোজনরসিক বাঙালির রসনাতৃপ্তি।