রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তিনি আমিষ জাতীয় খাবার খান না বলে জানা গেছে। এ কারণে তিনি কারাগারে কী খাবেন সেটি নিয়ে সন্দেহ ছিল অনুসারীদের। আদালত থেকেও তাকে ধর্মীয় নেতা বিবেচনা করে খাবার দেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশনা মেনে তাকে পছন্দানুযায়ী খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, কারাগারে এখনো ডিভিশন পাননি চিন্ময় কৃষ্ণ। তাকে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। যদিও মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ডিভিশনের আদেশ দেন। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত তাকে ডিভিশন দেওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন আসেনি বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহিম বলেন, আদালত আদেশ প্রদান করলে ডিভিশন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন থাকতে হয়। জেলা প্রশাসন থেকে সেই অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এখনো সেই সিদ্ধান্ত আসেনি। এ কারণে তাকে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে।
বাইরে থেকে চিন্ময় দাসকে খাবার দেওয়া হচ্ছে কি না– জানতে চাইলে কারাগারের এ কর্মকর্তা বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী কোনো বন্দিকে বাইরে থেকে খাবার দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে আমরা নিরামিষ জাতীয় খাবার যেটি তিনি খেয়ে থাকেন, সে ধরনের খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছি।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় রাজধানীর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন (মঙ্গলবার) কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় তাকে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইসকন সমর্থকরা। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। দুপুরের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।
একপর্যায়ে বিকেলে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে খুন হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী। তিনি চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী ছিলেন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম শহরে দুই দফা এবং লোহাগাড়া উপজেলায় দুই দফা জানাজা শেষে উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফারেঙ্গা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে আইনজীবী সাইফুলকে দাফন করা হয়।