কোচ-খেলোয়াড় দ্বন্দ্ব নিয়ে বাফুফে সদস্যের হুঙ্কার

আগামী জুনে নারী এশিয়ান কাপ বাছাই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সেই লক্ষ্যে নারী ফুটবলারদের প্রস্তুতিতে নামার আগে মাঠ সংকটে পড়েছে। কমলাপুর স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ চলছে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামও প্রস্তুত নয়। বুয়েট মাঠ বেশ শক্ত হওয়ায় বল নিয়ে অনুশীলন হচ্ছে না।

নারী দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পরিদর্শনের পর সন্তোষ প্রকাশ করলেও অনুশীলন করতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। বাফুফে তাই বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় নারী দলকে অনুশীলনে পাঠাতে চায় আগামী পরশু (শুক্রবার) থেকে। গতকাল ও আজ (বুধবার) জিমেই সময় কেটেছে নারী ফুটবলারদের। বাটলারের নির্দেশেই চলছে জিম কার্যক্রম। সিনিয়র নারী ফুটবলাররা জিম করলেও তারা করেন নিজেদের মতো করে। পিটার বাটলারের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব পুনরায় প্রকাশ্যে এসেছে। 

ফুটবলে দল নির্বাচন ও অনুশীলনে কোচই সর্বেসর্বা। সে হিসেবে কোচের নির্দেশনা অমান্য শৃঙ্খলা ভঙ্গেরই শামিল। কোচ-খেলোয়াড়ের এই দ্বন্দ্বে বর্তমানে কোচের পক্ষেই যেন অবস্থান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। আজ বিকেলে বাফুফের নির্বাহী সদস্য কামরুল ইসলাম হিল্টন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভর করে বাফুফে চলবে না। নির্বাহী সদস্য, ম্যানেজমেন্ট চিন্তাভাবনা করেই (কোচ নিয়োগ) সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খেলোয়াড়দের কথা এখানে চলবে না।’

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন এই নারী ফুটবলাররাই। পুরুষ ফুটবলে কোনো সাফল্য নেই। নারী ফুটবলাররাই দুই বার টানা সাফ চ্যাম্পিয়ন করেছে। বাংলাদেশের নারী দলে সিনিয়র ফুটবলারদের অবদানও অস্বীকার করার উপায় নেই। এ নিয়ে বাফুফের নির্বাহী সদস্যের মন্তব্য, ‘খেলার মধ্যে ছোটখাটো কিছু বিষয় থাকে। আমরা সেগুলো মিনিমাইজ করে নেব। তবে শৃঙ্খলার বিষয়ে বাফুফে কোনো মিনিমাইজ করবে না।’

নেপালের কাঠমান্ডুতে সিনিয়র ফুটবলার ও ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে সেই সংকট আর সামনে আসেনি। পিটার বাটলারের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছে বাফুফে। দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব নিয়েই তিনি গত সোমবার রাতে এসেছেন। এরপর থেকে আবার নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। সিনিয়র ফুটবলারদের সঙ্গে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের দূরত্বের বিষয়টি বাফুফের জানা। এরপরও এতদিন এ নিয়ে উদ্যোগ নেয়নি দেশীয় ফুটবলের এই সর্বোচ্চ সংস্থা।

আজ মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বিকেলে কয়েকজন নারী ফুটবলারের সঙ্গে বসেছিলেন। সেই সময় অবশ্য বেশ কয়েকজন ব্যক্তিগত কাজে ফেডারেশনের বাইরেও ছিলেন। সংকট দূর করতে নারী ফুটবলারদের পাশাপাশি কোচকে নিয়ে আলাদা বৈঠক করেছে বাফুফে। সেই বৈঠকে ছিলেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম।

নারী ফুটবলের চলমান সংকট নিয়ে ফুটবলারদের কেউ যেমন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চান না, তেমনি বাফুফের মধ্যেও লুকোচুরি-ভাব। বাফুফে ভবনে গণমাধ্যমকর্মীরা কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও নারী উইংয়ের প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে কিছু বলেননি। 

নারী ফুটবলাররা বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে দেখা করে সব কিছু বলতে চান। তিনি রাজনৈতিক সফরে অবস্থান করছেন ইংল্যান্ডে। ৩ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় এএফসির একটি সভায় অংশগ্রহণের পর তাবিথের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এর আগপর্যন্ত বিষয়টি অমীমাংসিত থাকবে নাকি কোনো পক্ষ নমনীয় হবে সেটাই দেখার বিষয়!