বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেছেন, চালকরা স্বেচ্ছায় একটা পিঁপড়াও মারতে চান না। কিন্তু নানা পারিপার্শ্বিক কারণে দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
শনিবার (২০ এপ্রিল) মহাখালী বাস টার্মিনালে বিআরটিএ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে দেশে বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জিডিপি লস হয়। এটাকে যদি পার্সেন্টে হিসাব করি তাহলে দাঁড়াবে ১.৫%। এটা তো শুধু আর্থিক হিসাবের কথা বললাম। একটা কর্মক্ষম ব্যক্তি যদি কোনো পরিবারের মারা যায়, তাহলে তো পুরো পরিবারই শেষ।
নানা সীমাবদ্ধতার কারণে হার্ডকপি ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে হার্ড কপির জন্য কেউ মরিয়া যেন না হয়। এটা ওয়েল সার্কুলেটেড। ই ড্রাইভিং লাইসেন্সই মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স। এটা মোবাইলে প্রদর্শন করে গাড়ি চালানো যাবে। কেউ যদি মনে করেন পুলিশ এটা মানছে না, ই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখানোর পরও পুলিশ মামলা দিচ্ছে তাহলে নির্দিষ্ট করে সেই পুলিশের নাম ফোন নম্বর লিখে আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব। কোনো পুলিশ সদস্য যদি বিষয়টি না জানেন তাহলে আইনের লোক হিসেবে সেটা তার ব্যর্থতা। সেটার জন্য ওই পুলিশ সদস্য দায়ী থাকবেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাড়ি চালকদের লাইসেন্স পেতে ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হচ্ছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের প্রস্তাবে ডোপ টেস্ট ডিজিটাল করার প্রস্তাব এসেছে। ডোপ টেস্ট নিয়ে প্রথমে আমরা কিছু সমস্যা ফেস করেছিলাম। এখন এটা নেই বললেই চলে। আমরা কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে একাধিক মিটিং করে একটা অ্যাপস প্রস্তুত করেছি এটা এখনো চালু হয়নি। চালু হলে বারবার অফিসে যেতে হবে না।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি পেলেই ডাম্পিং করার হুঁশিয়ারি দিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, গাড়ির রুট পারমিট অবশ্যই আপ টু ডেট থাকতে হবে। সেটার জন্য আমাদের যা যা করা দরকার আমরা করব। কোনোভাবেই সড়কে রুট পারমিটবিহীন ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে নামা যাবে না। এক্ষেত্রে চালকদের যত ধরনের সহযোগিতা দরকার আমাদের জানাবেন। সর্বোচ্চ সহযোগিতা আপনাদের করব। কিন্তু কেউ যদি ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে সড়কে নামেন, তাহলে আমরা ধরতে পারলেই সোজা ডাম্পিং স্টেশনে পাঠিয়ে দেব। এখানে কিন্তু জরিমানা করা হবে না, জরিমানা করে খুব একটা লাভ হয় না। প্রয়োজনে আমরা সময় দেব। ওই সময়ের মধ্যে যদি কাগজপত্র আপ টু ডেট করে না নেয়, ওই গাড়ি আমরা সিস্টেম থেকে ডিলিট করে দেব।
চালকদের টার্মিনলভিত্তিক ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা ট্রেনিংয়ের কথা বলেছেন, পেশাদারদের ট্রেনিং ব্যবস্থা চালু আছে। আর ব্যাপক ট্রেনিংয়ের জন্য আমরা চিন্তা করেছি টার্মিনালভিত্তিক ট্রেনিং দেব৷ আর এ ধরনের অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামও আমরা ঘন ঘন করব। যাতে চালক, যাত্রী থেকে শুরু করে সকল স্টেকহোল্ডাররা আরও বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার আবুল মোমিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কালাম প্রমুখ।