গারো পাহাড়ে অসুস্থ বুনোহাতির ধারাবাহিক চিকিৎসা

শেরপুর সংবাদদাতা : শেরপুরের গারো পাহাড়ে ১০/১২ বছরের অসুস্থ একটি মাদি বুনোহাতিকে ১৭ দিন পর ধারাবাহিক চিকিৎসা দিয়েছে বন বিভাগ। গত রোববার সকালে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সমশ্চুড়া এলাকার গারো পাহাড়ের অভ্যন্তরে ওই চিকিৎসা সেবা দেয়া করা হয়। এর আগে গত ১ মে নয়াবিল ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি এলাকার গহীন জঙ্গলে এই অসুস্থ হাতিটিকে প্রথম চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছিল। বন বিভাগ সূত্র জানায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকায় প্রায় শতাধিক বুনোহাতি কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে আনাগোনা করছিল। এসব বুনোহাতি খাদ্যের সন্ধানে কখনো ধানক্ষেতে কখনো বা লোকালয়ে হামলা করে আসছে। ফসল ও বসতবাড়ি রক্ষা করতে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। আবার কেউ কেউ ধানক্ষেতে জেনারেটর বা বৈদ্যুতিক তার দিয়ে ফাঁদ পেতে ক্ষুধার্ত হাতিগুলোকে নিভৃত করতে চেষ্টা করে। এসব নিয়ে মাঝে মধ্যেই মানুষ ও বুনোহাতির মধ্যে দ্বন্দ্ধ তৈরি হয়। কখনো বা বুনোহাতিকে কিছু অসাধু মানুষ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। গারো পাহাড়ে এমনই এক অসুস্থ হাতির সন্ধান পায় বন বিভাগ। পরে ওই অসুস্থ হাতিটির চিকিৎসা শুরু করে বন কর্মকর্তারা। অসুস্থ এ হাতির চিকিৎসার মেডিকেল টিমের প্রধান চিকিৎসক গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রায় ৩/৪ মাস আগে বল্লম জাতীয় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ওই হাতিকে আঘাত করা হয়েছিল। এর ফলে ৩/৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যরে ওই আঘাতের গভীরতা হয় প্রায় ৬ ইঞ্চির মতো। এই আঘাতের কারণে হাতিটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার দেহের মেজর টিস্যু ডেমেজ হয়ে যায়। তিনি জানান, প্রথম চিকিৎসার পর আবার পাহাড়ে এসে ওই হাতিকে অজ্ঞান করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থান পুনরায় ড্রেসিং করে তার দেহে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আগের চেয়ে এখন অবস্থা বেশ উন্নতির দিকে। আশা করা হচ্ছে খুব দ্রুতই হাতিটি সুস্থ হয়ে উঠবে।