*ছেঁড়াস্মৃতি*-আব্দুর রউফ মান্নান

*নজিপুর হাই স্কুলে ভর্তি* অনলাইন সংস্করণ – ০৫ (৩০ থেকে ৩৪ পৃষ্ঠা)

আগের অনেক বন্ধুদের মধ্যে আমরা তিন বন্ধু ছিলাম খুব কাছের । তাদের সঙ্গে খেলাধুলা, লেখাপড়া করে বড় হতে লাগলাম। ক্লাস সেভেনে ওঠার পর দাদা আমাকে পত্নীতলা থানার (এখন উপজেলা) নজিপুর হাই স্কুলে ভর্তি করে দিলেন। ভর্তির কয়েকদিন আগে দাদা আমাকে সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে গেলেন। নজিপুর হাই স্কুল আমাদের ওই অঞ্চলে বেশ নামকরা। স্কুলে গিয়ে ছাত্রদের দেখে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। যেমন বড় বড় ক্লাসরুম তেমনি শতশত ছাত্র, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। আমাদের গ্রাম থেকে নজিপুরের দূরত্ব প্রায় ৭ মাইল। গরুর গাড়ি ছিল যাতায়াতের একমাত্র বাহন।

স্কুলের হেড মাস্টার তখন জনাব খয়ের উদ্দীন আহম্মেদ। ভদ্রলোক দাদার পূর্বপরিচিত। দাদা হেড স্যারের রুমে ঢুকে সালাম দিয়ে বললেন- ‘এই হচ্ছে সিরাজের একমাত্র ছেলে। তাদের মধ্যে আমাকে নিয়ে অনেক কথা হলো। পরে জানলাম বাবা ও হেড স্যার পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট হাই স্কুলে সহপাঠি ছিলেন এবং তারা দু’জন স্কুলের হোস্টেলে একসঙ্গে থাকতেন। স্বভাবতই আমার প্রতি তাঁর সুনজর পড়লো। স্কুলে ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে হোস্টেলে থাকার সিটও বরাদ্দ পেলাম। নজিপুর স্কুলে দু’টি ছাত্র হোস্টেল ছিল। নাজিমুদ্দীন হোস্টেল এবং পুরাতন বাজারে একটা বড় বাড়ি (করিম চেয়ারম্যানের বাড়ি) ভাড়া নিয়ে হোস্টেল বানানো হয়েছিল।

নাজিমুদ্দীন হোস্টেলে ১ নম্বর রুমে আমার থাকার ব্যবস্থা হলো। সেখানে রুমমেট হিসেবে পেলাম খীরসিন গ্রামের আমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে স্কুলের কাছেই আমাদের হোস্টেল। একে তো আমি স্কুলে নতুন, তারপর অজ পাড়াগাঁও থেকে আসা, সুতরাং স্কুলের নিয়ম-কানুন সবই অজানা। তবুও কয়েকদিনের মধ্যে সবকিছুই নিজে নিজে জেনে নিলাম। আমাদের ক্লাসে ৮৪ জন ছাত্র ছিল। ক্লাস টেন পর্যন্ত সব ক্লাসেই ছাত্রসংখ্যা প্রায় একই রকম। স্কুলে শিক্ষক ছিলেন ১৭/১৮ জন। প্রথম দিনের ক্লাসের কথা বেশ মনে আছে আমার।

ক্লাসের বেশিরভাগ ছাত্রই বলতে গেলে স্কুলে নতুন। শিক্ষক এবং উঁচু ক্লাসের ছাত্রদের (স্কুলের বড় ভাইয়েরা) সঙ্গে কেমন আচার আচরণ করতে হবে তা শিক্ষক মহোদয় খুব গুরুত্ব সহকারে আমাদের বোঝালেন। এরপর আমরা ক্লাসের সবাই পরস্পরের বন্ধু হয়ে গেলাম। সব কিছুই নতুন, তারপরও আমার কেমন যেন ভালো লেগে গেল। মনে হলো আমি যেন শহরে চলে এসেছি। ক্লাসের ফার্স্টবয় নজরুল ইসলাম এবং নাসির স্যারের ছোট ভাই রুহু আমীন- অনেকেই আমার সহপাঠী ছিল।

সকালের নাস্তা যে যার মতো করে গুড়, মুড়ি বা চিড়া দিয়ে সেরে নিতাম। দুপুরে আর রাতে বাবুর্চির হাতের রান্না করা খাবার দেয়া হতো। হোস্টেলে বড় একটা ডাইনিং হল ছিল। হোস্টেলের প্রায় ৩০/৩৫ জন ছাত্র এক সঙ্গে খেতে বসতাম। আমাদের হোস্টেলের বাবুর্চি খুব ভাল রান্না করতো, ওর নাম সরাফত আলী। সরাফত বাবুর্চির ডাল ছিল স্পেশাল, একবার খেলে বারবার খেতে মন চাইতো। তার সাহায্যকারীর নাম আব্দুল গফুর। ডাইনিং হলে প্রত্যেকের জন্য আলাদা বাটি থাকতো। খাওয়ার আগে দুইজন ছাত্র মাছ, মাংস বা অন্যান্য তরকারি আলাদা আলাদা বাটিতে ভরে পরিবেশন করতো। আমরা সবাই একসঙ্গে মহাতৃপ্তি সহকারে খাওয়া সেরে নিতাম। হোস্টেলের সুপার ছিলেন মোরসালিন স্যার, চিরকুমার। খুব রাশভারী এবং রগচটা প্রকৃতির মানুষ ছিলেন তিনি। ছাত্রদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং কাপড়-চোপড়, বিছানাপত্র, বইখাতা গুছিয়ে রাখার প্রতি ছিল তাঁর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। মোরসালিন স্যার আমাদের বাংলা ব্যাকরণ পড়াতেন। খুব ভালো শিক্ষক ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে আমার খোঁজখবর রাখতেন। বহু বছর পর আমি নজিপুর স্কুলে স্যারের সঙ্গে দেখা করি, তখন সদ্য বিয়ে করেছি। স্যারকে দেখে খুব খারাপ লাগলো, শরীরটা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। তার কয়েকদিন পরই মোরসালিন স্যার পরলোক গমন করেন।

সেই ছোটবেলার সহপাঠীদের কথা মনে হলে আবার সেখানে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। সে সময় নকুচার শামসুল ভাই, মহেশপুরের আব্দুল আজিজ, শিশা গ্রামের আব্দুল খালেক চৌধুরী, শিবপুরের আজিজার, আমার ফুফাতো ভাই ফজলুসহ অনেকেই একসাথে ছিলাম। খালেক ভাই ছিলেন আমাদের হোস্টেলের মনিটর এবং ক্লাসের ফার্স্ট বয়। যে কোন খেলাধুলায় তিনি পারদর্শী ছিলেন।

খেলাধুলার প্রতি প্রচুর ঝোঁক ছিল আমার। তখন ফুটবল, ভলিবল এবং ক্রিকেট খেলা হতো স্কুলে। আমি বড়দের সঙ্গে খেলতে খেলতে সব খেলাতেই পারদর্শী হয়ে উঠলাম। বড় স্কুল, অনেক ছাত্র, অনেক বন্ধু। সেই স্কুল জীবনের স্মৃতি ভোলার নয়। এখনো আমার মনে হয় বারবার। ক্লাস সেভেন থেকে এইটে উঠলাম, আমার রোল নম্বর হলো ২৩। সে সময়ে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন অভিভাবককে স্কুলে আসতে হতো। আমার ফলাফল দেখে দাদার মন খারাপ হলো, তবে বকাবকি করলেন না। শুধু বললেন- ‘মন দিয়ে পড়। ক্লাসে প্রথম হতে হবে তোমাকে।’ আমি তো বুঝি, ক্লাসের ৮০ জন ছাত্রের ভিতর ২৩ নম্বরে আসা তখনকার দিনে এত সহজ ছিল না। কারণ, এলাকায় একটি মাত্র হাইস্কুল এবং নির্বাচিত ও মেধাবীরাই এইখানে ভর্তির সুযোগ পেত।

দাদার মনোকামনা পূরণের লক্ষ্যে আমি প্রতিজ্ঞা করলাম, আগামীতে অবশ্যই ভাল রেজাল্ট করতে হবে। দিনের পড়া দিনেই শেষ করার উপর জোর দিলাম। শুধুমাত্র স্কুল দীর্ঘ ছুটি হলে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হতো।

এদিকে আমার গ্রামের বন্ধু আহম্মদ এবং কাফিজ দু’জনই পত্নীতলা থানার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত আমন্ত হাই স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তাদের সঙ্গে চিঠি বিনিময়ের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতাম। এভাবে আরো এক বছর চলে গেল। আমার স্নেহময়ী মার কথা তেমন মনে পড়তো না। কেমন যেন ধূসর হয়ে গেল । বছর ঘুরে আবারো বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলো। আমাদের স্কুল ছুটি হলো। আমি বাড়ি গেলাম, গ্রামের সুধিজন ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা হলো বহুদিন পর। গ্রামে প্রায় দু’সপ্তাহ কাটানোর পর আবারো হোস্টেলে ফিরে এলাম। দু’ একদিনের মধ্যে রেজাল্ট হবে। এবার পড়া-লেখা বেশ ভালো হয়েছে। নিজের উপর ভরসা রাখলাম, কিন্তু বিধি বাম, আগের বার রোল নম্বর হয়েছিল ২৩ এবার আরো নিচে নেমে গেলাম, রোল হলো ২৬। ফলাফল দেখে মন খারাপ হলেও জিদ চেপে গেল। এবার লেখাপড়ায় আরো মনোযোগী হলাম। দাদাকে বললাম, আমাকে প্রাইভেট পড়তে হবে কাজী জব্বার স্যারের কাছে। যথারীতি ১ বছর প্রাইভেট পড়া শেষ করে মনে হলো এবার আমার রোল নম্বর ১০ এর মধ্যে থাকতেই হবে।

*ছোটদের ফুটবল টুর্নামেন্ট*

ছুটির মধ্যে বাড়ি এসেই ছোটদের ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা দিলাম। আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট। অন্যান্য স্কুলের সঙ্গে আমাদের নজিপুর হাই স্কুলেও ফিক্সচার দেওয়া হলো। গ্রামের ছেলেদের নিয়ে একটা মিটিং করলাম। বড়রাও মিটিং-এ সামিল হলো। সিদ্ধান্ত হলো সবার কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে খেলা পরিচালনা করা হবে। তখন ফুটবল খেলার বেশ প্রচলন ছিল। আর যদি সেটা আমাদের আমাইপুকুরে ফুটবল মাঠ হয়, তা হলে তো কথাই নেই। খেলা জমলো, দর্শকও প্রচুর। আমাদের ক্লাবের নামেই খেলা চলছিল। আমিই ওই খেলার পরিচালক ।

১৯৬২ সালের কথা, জীবনে এই প্রথম ফুটবল টিমের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। টুর্নামেন্টের শেষ পর্যায়ে এসে কেউ আর চাঁদা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল। এতদিন আমি নিজে সব খরচ করেছি। আমার হাতেও টাকা নেই, কিভাবে খেলার প্রাইজ কেনা হবে? মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আস্তে আস্তে খেলার ফাইনালের দিনও ঘনিয়ে আসতে থাকলো। উপায়ান্তর না দেখে দাদার শরণাপন্ন হলাম। দাদা অনেক বকাঝকা করে ৩০ টাকা দিলেন। ফাইনালের তিন দিন বাকি। আমি আর দেরি না করে একাই নওগাঁ গেলাম শিল্ডকাপ কেনার জন্য।

সে সময় বাসে করে নজিপুর থেকে নওগাঁ পৌঁছতে সময় লাগলো ছয় ঘন্টা। ধূলাবালিতে একাকার হয়ে প্রায় শেষ বিকেলে নওগাঁ মহকুমা শহরে পৌঁছলাম। এর আগে আমি দাদার সঙ্গে দু’একবার নওগাঁ গিয়েছি। দাদা নওগাঁয় যে হোটেলে উঠতেন আমিও সেখানেই উঠলাম। হোটেলের নাম ছিল ‘হাজীর হোটেল’। হোটেল কাউন্টারে যেতেই হাজী সাহেব হোটেলের মালিক কাম ম্যানেজার আমাকে চিনতে পারলেন। বড় আদর-যত্ন করে খাওয়ালেন এবং একটা সিটের ব্যবস্থাও করলেন। আমি মনে মনে ভাবলাম, হয়তো খাওয়া ও হোটেল সীটের ভাড়া নেবেন না, কিন্তু হাজী সাহেব হিসাব করে টাকা বুঝে নিলেন। তখনই শিল্ডকাপ কেনার জন্য খেলার সামগ্রীর একটি দোকানে গেলাম। দোকানটিতে শিল্ড আছে, কিন্তু কাপ নেই। শিন্ডের দাম ১৮ টাকা। হোটেলে ফিরে দেখি আমার হাতে আছে মাত্র ৫ টাকা। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।

পরদিন ভোর পাঁচটায় পায়ে হেঁটে রওনা দিলাম আমাইপুকুর। হাতে একটা ঝুলন্ত ব্যাগ, আটআনা দামের একটা পাউরুটি আর পকেটে পাঁচ টাকা। তাই নিয়ে প্রায় ৫৭ মাইল রাস্তা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলাম। কোথাও এক মুহুর্তের জন্য বিশ্রাম নেইনি। পরের দিন এক বন্ধুকে নিয়ে সাইকেলে চেপে জয়পুরহাট থেকে ১৫ টাকা দিয়ে কাপ কিনে আনলাম। এটাই ছিল আমার কৈশোর জীবনের এক স্মরণীয় ঘটনা।

যখন স্কুলের দীর্ঘ কোনো ছুটি হতো তখন হেঁটেই বাড়ি যেতাম । গাড়িতে দাদা-দাদি খুব আদর-যত্ন করতেন। বড়মা আধভোলা- তবে খুব ভালো মানুষ ছিলেন। মা ও বড়মার মধ্যে কোনোদিন আমরা ঝগড়া-বিবাদ দেখিনি। বড়মার দুই মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে আকিমন বিয়ের পরপরই মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলে। চার/পাঁচ বছর ঘর-সংসারের পর স্বামী তাকে তালাক দেয়। সকলেই বলতো তাকে জ্বীনে ধরেছে। ঘুমাতো না। সবাই তার প্রতি ত্যাক্ত-বিরক্ত ছিল। রাতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে গোসল করতো। প্রচণ্ড শীতের রাতেও পুকুরে গিয়ে গোসল করতো এবং কারো সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলতো। এভাবেই আকি (আমিন) বুবুর ৫৫ বছর কেটে যায় এবং ৭০ বছর বয়সে মারা যান। তার একমাত্র মেয়ে আফরুজার সাথে কথা হয় এখনো।

আকি বুবু যখন মারা যান তখন আফরোজা বলেছিল- ‘আমার মায়ের জন্য আর কতই খরচ হতো, আপনি ভাই হয়ে আমার মাকে দেখে রাখতে পারেননি।’ প্রায় ৩৫ বছর আকি বুবু কষ্ট করে গেছে। আমার এখনো মনে পরে আকি বুবুর কিছু কথা, শেষবার যখন আকি বুবুকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে রেখে এসেছিলাম, বুবু আমাকে বলেছিল- ‘টুকুবাবু, আমাকে কই রেখে যাচ্ছিস, আমাকে নিয়ে যা….. আমার তো কিছু হয়নি….. এখানে আমি তো মারা যাবো ‘ আমি আজও অবাক হই, আকি বুবু মানসিক ভারসম্যহীন হলেও আমাকে একমাত্র তিনিই টুকুৰাবু বলে ডাকতেন। আমি পারিনি তাকে আমার কাছে রাখতে, আমার পরিবার ও পরিস্থিতি আমাকে আকিবুবুর দুঃসময়ে তার পাশে থাকতে দেয়নি। আমাকে ক্ষমা করো আকিবুবু।

বড়মার বড় মেয়ে সুফিয়া বুবু খুব ভালো মানুষ ছিলেন। বেশ বনেদি ঘরে তার বিয়ে হয়। ভারত ভাগের সময় তার শ্বশুর বাড়ি (নিমপুর গ্রাম) ভারতীয় অংশে পড়ে যায়। একসময় ভারত ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বৈরিতার কারণে নিমপুরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সুফিয়া বুবুদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়। পরবর্তীকালে তারা পূর্ব পাকিস্তানে পত্নীতলা থানার কাঁটাবাড়ী (হাড়পুর) গ্রামে চলে আসেন। তখন থেকে নিয়মিত জমিরুদ্দিন দুলাভাই ও সুফিয়া বুবুর সঙ্গে দেখা হতো। দাদা তাদেরকে অত্যন্ত আদর-যত্ন করতেন। সবার প্রতি দাদার অন্যরকম ভালোবাসা ছিল। আমাদের বাবা নেই কিন্তু দাদার আদর-যত্নে কেউই হারিয়ে যাওয়া বাবার অভাব অনুভব করিনি কোনোদিন।

দাদার ছেলে হারানোর ব্যথা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। সংসারের নানান কাজ এবং ৮/১০ জন কাজের লোক নিয়ে দাদা সারাটা দিন ব্যস্ত সময় পার করতেন। সন্ধ্যা হলেই নামাজের পর সবাইকে নিয়ে গল্প, হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠতেন। দাদা আজীবন আমাকে বাবা বলে ডাকতেন। বলতেন, মান্নানকে খুব বড় মানুষ করতে চাই। আমার লেখাপড়ার উপকরণ, কাপড়-চোপড় সবই নওগাঁ থেকে কিনে আনতেন। আমিও লেখা-পড়ার প্রতি বেশ মনোযোগী হই।

চলমান …………………..